1. tohidulstar@gmail.com : sobuj ali : sobuj ali
  2. ronju@chapaidarpon.com : Md Ronju : Md Ronju
৭০ কোটি টাকার প্রকল্প দেড় বছরে অচল ॥ সাবমেরিন ক্যাবল ছিঁড়ে অন্ধকারে চরাঞ্চলের ৬ গ্রাম - দৈনিক চাঁপাই দর্পণ
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
গণঅভ্যুত্থানে পলাতক বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিনের অরাজকতা আর নয় নতুন ইটভাটা ॥ বন্ধ হচ্ছে দেশের ৩৪৯১টি ইট ভাটা-পরিবেশ উপদেষ্টা নিউইয়র্কে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. ইউনূস হবিগঞ্জে মানহানি মামলায় খালাস তারেক রহমান সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গ্রেপ্তার-কারাগারে প্রেরণ চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পুরস্কার বিতরণ পঞ্চগড় সীমান্তে বিজিবির স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প ও মতবিনিময় সভা পোরশা ঘাটনগরে মাদক নির্মূলে সমাবেশ গোদাগাড়ীতে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক হলেন সিপিডির ফাহমিদা খাতুন

৭০ কোটি টাকার প্রকল্প দেড় বছরে অচল ॥ সাবমেরিন ক্যাবল ছিঁড়ে অন্ধকারে চরাঞ্চলের ৬ গ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ২১০ বার পঠিত

৭০ কোটি টাকার প্রকল্প দেড় বছরে অচল ॥ সাবমেরিন ক্যাবল ছিঁড়ে অন্ধকারে চরাঞ্চলের ৬ গ্রাম

প্রায় ৭০ কোটি টাকার প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ২ টি ইউনিয়নে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। কিন্তু উদ্বোধনের মাত্র দেড় বছরের (১৭ মাস) মাথায় কেবল ছিঁড়ে গিয়ে অচল হয়ে গেছে। এতে করে ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ পাচ্ছে না চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী ছয়টি গ্রামের মানুষ।
ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। এ প্রকল্পের আওতায় পদ্মানদীর তলদেশে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে চরাঞ্চলকে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের আওতায় আনা হয়।
পল্লী বিদ্যৎ সমিতির একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, সদর উপজেলার ইসলামপুরের চাটাইডুবী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র এলাকার মীরের চর থেকে বাতাশ মোড় পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার এবং বাতাশ মোড় থেকে নিশিপাড়া পর্যন্ত পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে ১৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবল এবং ১০৭ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে পদ্মার চরে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্ধোধন করা হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। ২ উপজেলার ৪ হাজার ২’শ গ্রাহক বিদ্যুৎ সুবিধায় আসে। কিন্তু মাত্র ১৭ মাসের মাথায় ৪০ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবলের ৩টি ফেজের মধ্যে ১ টি ফেজের সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ১৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার কেবলের ২ দফায় ৩টি ফেজের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকলেও এর সমাধান করেনি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। কবে নাগাদ এ সংকট নিরসন হবে, তাও বলতে পারছে না পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সুত্র জানায়, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয় প্রায় সত্তর কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ কোটি টাকা শুধু নদীর তলদেশে সাবমেরিন কেবল স্থাপনেই ব্যয় হয়। স্থানীয়রা জানায়, গত রবিবার রাতে পদ্মা নদীর তলদেশে বসানো সাবমেরিনের সব ক্যাবল ছিঁড়ে যায়। ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের চরলক্ষ্মীপুর, দক্ষিণ পাঁকা, নিশিপাড়া চর ও কদমতলা এবং উজিরপুর ইউনিয়নের সেতারাপাড়া। এছাড়া সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের সূর্যনারায়ণপুরে বিদ্যুৎ সেবা বন্ধ হয়ে যায়। মাত্র ২ হাজার গ্রাহক চরে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায়। বাকী প্রায় ২ হাজার ২’শ গ্রাহকের গত সাতদিন ধরে বিদ্যুৎসেবা বন্ধ থাকায় তারা জমিতে সেচ দিতে পারছেন না। বাড়তি খরচে জ্বালানি তেলে শ্যালো টিউবওয়েলে সেচ দিতে হচ্ছে। অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং, মুঠোফোনের চার্জ, নেটওয়ার্ক সেবার পাশাপাশি সরিষা, ধান ও গম ভাঙানো মেশিনও বন্ধ রয়েছে। সাধারণ জীবনযাপনে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়েছে। এব্যাপারে সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) ফিরোজ কবির দাবী করেন, চরের মাত্র ৬’শ গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সদর উপজেলার চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। টেকনিক্যাল টিম কে জানানো হয়েছে। তারা আসলে সংযোগ টি পুণস্থাপিত হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলার চরপাঁকা এলাকার বাসিন্দা এস এম আল আমিন জুয়েল জানান, নদীভাঙন হলে যাতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়ে যায় সে কারণে নদীর পূর্ব ও পশ্চিমপ্রান্তে অতিরিক্ত ১০ হাজার মিটার তার বেশি রাখা হয়। একই বছরের ডিসেম্বরে সংশ্লিষ্টদের একটি অংশ অতিরিক্ত তার কেটে চুরির চেষ্টা করলে রুখে দেয় চরাঞ্চলবাসী। এবার পল্লী বিদ্যুতের গাফলতির কারনে মাত্র এক বছরের মাথায় অনিদ্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যুৎহীন হয়ে গেল চরাঞ্চলবাসী।
কদমতলা এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান আলী জানান, গত সাতদিন ধরে বিদ্যুৎসেবা পাচ্ছেন না তার গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা। ফলে বিদ্যুৎ পরিসেবা পেতে তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারকে বিষয়টি জানালেও তারা এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। কয়েক’শ পরিবার কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎহীন রয়েছে। তারা সবাই সাবমেরিন ক্যাবলের সাহায্যে বিদ্যুৎসেবার আওতায় ছিল।
শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মালেক নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরে বলেন, সমস্যার কথা জানানোর পরও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ মাসের শুরুর দিক থেকেই সাবমেরিন ক্যাবলের দুটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবার পরও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কয়েকদিনের মধ্যে বাকী ২ টি সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে লোডশেডিংয়ের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তবু এলাকায় কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ এলেও মোবাইল ফোনে চার্জসহ অন্য কাজ করা হয়ে যেত। কিন্তু গত সাতদিন ধরে চরাঞ্চলে কোনো বিদ্যুৎ নেই। এলাকার মানুষ পদে পদে ভোগান্তিতে পড়ছেন।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার ছানোয়ার হোসেন বলেন, ১০ সেপ্টেম্বর রাতে সাবমেরিন ক্যাবলের তার ছিঁড়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। প্রায় ৭০ কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পটি সচল রাখতে কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের সিংহভাগ জনবল অন্য আরেক জায়গায় কাজ করছে। ফলে এখানের সাবমেরিন ক্যাবলটি মেরামতে সময় লাগতে পারে। আপাতত তাদের কিছুই করার নেই।

এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার মীরেরচর নামক স্থানে পদ্মা নদীতে সাবমেরিন ক্যাবল লাইন স্থাপন প্রকল্পের কিছু তার উদ্ধার করা হয়েছে। সে সময় পদ্মা ব্রিকসের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম অভিযোগে বলেন, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনএস করপোরেশনের লোকজন বাগানের ভেতর দিয়ে স্থাপিত ভুগর্ভস্থ লাইন থেকে মোটা তারগুলো তুলে কেটে কেটে জড়ো করার সময় বিষয়টি জানাজানি হলে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কাটা তারগুলো উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির স্টোরে নিয়ে যায়। তার চুরির ঘটনায় স্থানীয়রা অভিযোগ করেছিলেন, এসব তার চুরির সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা থাকায় এঘটনা ঘটেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
Copyright All rights reserved © 2024 Chapaidarpon.com
Theme Customized BY Sobuj Ali
error: Content is protected !!