চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানার ওসি, পুলিশ সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দাসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শনিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১১টার সময় উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মামলার এজাহারনামীয় ওই আসামির নাম মোজাম্মেল হক। তিনি আনোয়ারা উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হকের সমর্থক। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার (৮ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার রায়পুর এলাকায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের একটি মতবিনিময় সভা ছিল। ওই অনুষ্ঠান শেষ করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক ও তাঁর কর্মী মোজাম্মেল হক চাতরী চৌমুহনী বাজারের একটি রেস্তোরাঁয় নাশতা করছিলেন। ওই সময় পুলিশ মোজাম্মেল হককে মামলার আসামি উল্লেখ করে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে চায়। তখন উপস্থিত লোকজন তাঁকে ছিনিয়ে নেয়। মোজাম্মেলকে ছিনিয়ে নেওয়ার সময় পুলিশ ও লোকজনের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ওই সময় চাতরী চৌমুহনী বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এর আগে গত শুক্রবার (৭ জুন) বিকেল সোয়া ৪টার সময় উপজেলার বন্দর সেন্টার এলাকায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় মামলা হয়। মামলার আসামি মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করতে গেলে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী থানার পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় জনতার সংঘর্ষ বাধে। এ সময় লোকজন মোজাম্মেল হককে ছিনিয়ে নেয়।
মোজাম্মেল হক আনোয়ারা উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হকের সমর্থক। আনোয়ারা থানার ওসি সোহেল আহমেদ বলেন, কর্ণফুলী থানার পুলিশ আমাদের নিয়ে যৌথভাবে অভিযান চালায় চাতরী চৌমুহনী বাজারে। ওই সময় এজাহারনামীয় প্রধান আসামি মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তারও করি। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে লোকজন অভিযুক্ত আসামি মোজাম্মেল হককে হ্যান্ডকাপসহ ছিনিয়ে নেন। ওই সময় তাঁদের ইটপাটকেল ও লাঠির আঘাতে আনোয়ারা থানার তিনজন, কর্ণফুলী থানার ওসি জহির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।