৩ সাঁওতাল হত্যা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও চিহ্নিত পুলিশ সদস্যসহ জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গাইবান্ধার গেবিন্দগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ চৌকি আদালত এলাকায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মাস্টার, আদিবাসী সাঁওতালদের নেতা বার্নাবাস টুডু, সুব্রল হেমব্রম, প্রিসিলা মুরমু, রাফায়েল হাসদা, বৃটিশ সরেন, এলাকাবাসী ময়নুল ইসলাম, হাসান মোর্শেদ দীপন। ফিলিমন বাস্কে বলেন, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বেআইনিভাবে আদিবাসী সাঁওতালদের বসতবাড়ি উচ্ছেদের জন্য নিরীহ সাঁওতালদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তছনছসহ গুলিবর্ষণ করা হয়। সন্ত্রাসী হামলা, নির্যাতন ও গুলিতে সাঁওতাল শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ নিহত এবং অনেকেই গুরুতর আহত হয়। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতি ও সহায়তায় এসব বেআইনি কার্যকলাপ করে। পুলিশও সাঁওতালদের বাড়িঘরে প্রকাশ্যে অগ্নিসংযোগ করে। ওই ঘটনায় সাঁওতালদের পক্ষ থেকে থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, রংপুর চিনিকলের এমডি আব্দুল আউয়াল, সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল, কাটাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রফিকসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ৫০০-৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় এজাহার দাখিল করেন। পুলিশ সেটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে এন্ট্রি করে। থমাস হেমব্রম এর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে ১৪৪০২/১৬নং রিট পিটিশন দাখিল করে। আদালত ওই সাধারণ ডায়েরিটিকে মামলা হিসাবে এন্ট্রি করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করার নির্দেশ দেন। সাঁওতাল নেতা বার্নাবাস টুডু বলেন, পিবিআই ২০১৯ সালে ২৩ জুলাই মূল আসামিদের বাদ দিয়ে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোপত্র দাখিল করে। এরপর ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে নারাজি দাখিল করা হয়। নারাজি আমলে নিয়ে ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু সিআইডিও আবুল কালাম আজাদসহ মূল ১১ আসামিকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দিলে ২০২১ সালের ২ নভেম্বর বাদীপক্ষ নারাজি করেন বলে জানান সাঁওতাল নেতা। বৃহস্পতিবার নারাজির শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে অংশ নেন গাইবান্ধা জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী মুরাদুজ্জামান রব্বানী। গাইবান্ধা জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু জানান, শুনানি শেষে আদালত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দিয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।