আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের লগি-বৈঠার তান্ডবের প্রতিবাদে আলোচনা সভা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। মঙ্গলবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর ও সদর উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর পার্কে ২৮ শে অক্টোবরে ট্রাজেডি’র প্রতিবাদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি কেন্দ্রীয় কর্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণের আমীর মোঃ নুরুল ইসলাম বুলবুল।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর শাখার আমীর হাফেজ গোলাম রাব্বানী’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাবেক আমীর অধ্যাপক মোঃ রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যক্ষ মোঃ নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবু জার গিফারী, নায়েবে আমীর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক লতিফুর রহমান,
সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারী অধ্যাপক মুখলেশুর রহমান। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মো. সাদিকুল ইসলাম, সহকারি সেক্রেটারী মো. হাবিবুর রহমান, শিবগঞ্জ পৌর শাখার আমীর এমএ আজিজ, সেক্রেটারী আব্দুর রউফসহ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সভায় বক্তারা বলেন, আওয়ামীলীগের ইতিহাস সন্ত্রাসী, গুম, খুন, হত্যা, লুটপাট, নৈরাজজের ইতিহাস। ধর্ম নিরপেক্ষতার অবসান ঘটেছে। গত ৫ আগষ্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে দেশ দ্বিতীয় বারের মত স্বাধীন হয়েছে। আমরা বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে চাই। আমরা দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর স্বাধীন বাংলায় আজ মন খুলে কথা বলতে পারছি। আওয়ামীলীগ সরকার সাধারণ মানুষের বাক স্বাধীনতা, ভোটারাধিকার সহ বিভিন্ন অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। মহান আল্লাহ তা’আলা রহমতে আমরা আবারও নতুন বাংলায় স্বাধীন ভাবে সভা-সমাবেশ করতে পারছি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অংগ্রহনের মাধ্যমে দেশে আল্লাহ’র আইন কায়েম করতে চাই। সভায়, আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপিসহ বর্তমান অন্তরবর্তী কালীন সরকারের শাসন আমল নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। এছাড়া, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ইসলাম কোন সম্প্রদায় নয়, ইসলাম ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে সব ধর্মের জন্য পথ-নির্দেশক। এখন সময় এসেছে বাংলার জমিনে ইসলামের পতাকা উত্তোলন করার। তাই আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে নিয়ে ইসলামী আইন কায়েম করতে হবে।
উল্লেখ্য, রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মানবতাবিরোধী অপরাধ। ২০০৬ সালের এই দিনে এ দেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক কলংকজনক অধ্যায় রচিত হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে লীগ-বৈঠা দিয়ে তরতাজা তরুণদের পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে নারকীয় উল্লাস চালানো হয়েছিল। সবচেয়ে বড় মানবতাবিরোধী অপরাধ এদিনই সংগঠিত হয়েছিল। আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সেদিন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের উপর যে পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে, ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। আ’লীগ, বৈঠা, লাঠি, পিস্তল ও বোমা হামলা চালিয়ে যেভাবে মানুষ খুন করেছে, তা মনে হলে আজও শিউরে ওঠে সভ্য সমাজের মানুষ। সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ মেরে লাশের উপর নৃত্য উল্লাস করার মতো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এঘটনা-শুধু বাংলাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের হৃদয় নাড়া দিয়েছে। সেদিনের ন্যাক্কারজনক ও মানবতাবিরেধী ঘটনায় জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব থেকে শুরু করে সারাবিশ্বে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।