চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি. দূরে শিবগঞ্জ উপজেলা ফিরোজপুরে অবস্থিত শাহ্ নেয়ামতউল্লাহ (রহঃ) প্রতিষ্ঠিত তদীয় সমাধি সংশ্লিষ্ট তিন গম্বুজ মসজিদটি মোঘল যুগের একটি বিশিষ্ট কীর্তি। এটি ভ্রমন পিপাসুদের জন্য একটি দর্শণীয় স্থান। ঐতিহাসিক এই মসজিদ দেখতে দেশ—বিদেশের পর্যটকরা বছরের বিভিন্ন সময়ে দর্শণে আসেন। এতে ৩টি প্রবেশ পথ এবং ভেতরে ৩টি মেহরাব রয়েছে। মসজিদের ভেতর ও বাইরে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য কারুকার্য নেই। দেয়ালে কয়েকটি তাক আছে। স্থানীয় জনসাধারণ এই মসজিদে নিয়মিতভাবে নামাজ আদায় করে থাকেন। এই মসজিদ সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে সুলতান শাহ সুজা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দ্বিতল ইমারত মোঘল যুগের আর একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য কীর্তি। ইট নির্মিত ইমারতটি তোহাখানা নামে প্রসিদ্ধ। কথিত আছে বঙ্গ সুলতান শাহ সুজা তাঁর মোরশেদ হযরত শাহ নেয়ামতউল্লাহর উদ্দেশ্যে (রাজত্বকাল ১৬৩৯—১৬৫৮ খ্রিঃ) শীতকালীন বাসের জন্য ফিরোজপুর তাপনিয়ন্ত্রণ ইমারত হিসেবে এ ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। সময়ে সময়ে শাহ সুজাও এখানে এসে বাস করতেন। এর দৈর্ঘ্য উত্তর দক্ষিণে ১১৬ ফুট ও প্রস্থ ৩৮ ফুট। এতে ছোট বড় অনেক কামরা ও উভয় পার্শ্বে বারান্দা ছিল। জনশ্রম্নতি আছে যে, শাহ সুজা যখন ফিরোজপুরে মোরশেদ শাহ নেয়ামতউল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসতেন তখন উক্ত ইমারতের মধ্যবর্তী সুপ্রশস্ত কামরাটিতে বাস করতেন। গৌড়ের প্রাচীন কীর্তির মধ্যে এই শ্রেণীর ইমারত এই একটিই পরিলক্ষিত হয়। কড়িকাঠের উপর খোয়া ঢালাই করে যার ছাদ ও কোঠা জমাট করা হয়েছিল। উল্লেখিত মসজিদ ও তোহখানার নিকটস্থ সরোবর দাফেউল বালাহর তীরে অবস্থিত। এই দুই ইমারত হতে দুইটি সিড়ি সরোবরের তলদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। পূর্বতীর হতে এই ইমারত দুটোর দৃশ্যাবলী খুবই মনোরম।