টাকা ধার নিয়ে বন্ধক রাখা স্বর্ণালংকার ফেরত আনতে গিয়ে গৃহবধূ স্বর্ণালীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ৩০ হাজার টাকা ধার নেয়ার বিপরীতে বন্ধক দিয়েছিলেন, ১১ আনা ওজনের সোনার চেইন ও আংটি। এমনকি এই ধারের টাকা নেয়ার পর দিতে হয়েছে মাসে ৩ হাজার করে টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ধারের টাকা পরিশোধ করে সোনার অলংকার ফিরিয়ে আনতে গিয়ে মারধর লাঞ্ছিত হয়েছেন এক গৃহবধূ। এমনকি ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার লক্ষীপুর বানঝাপাড়া এলাকার মৃত মোস্তাকিম আলীর মেয়ে মোসাঃ স্বর্ণালী খাতুনকে (৩১)।
এনিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী। সদর উপজেলার বারোঘরিয়া পালপাড়া গ্রামের মো. মাসুদের সন্তান সাদ্দাম ওরফে প্রার্থনা হিজরার (তৃতীয় লিঙ্গ) বিরুদ্ধে এই মারধর ও ভয়ভীতি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে, স্থানীয় বাসিন্দা ও হামলার শিকার নারী সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মাস আগে সোনার ৮ আনা ওজনের পাক চেইন ও ৩ আনা ওজনের আংটি বন্ধক রেখে সাদ্দাম ওরফে প্রার্থনা হিজরার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার নেন স্বর্ণালী খাতুন। চুক্তি হয় এতে মাসে ৩ হাজার টাকা করে লাভ দিতে হবে। গত ১০ মে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে ধার ও লাভের সব টাকা ফেরত দেয় স্বর্ণালী খাতুন। পরে বন্ধক রাখা সোনার অলংকার ফেরত চাইলে অন্য জায়গায় রয়েছে জানিয়ে আগামীকাল দিব বলে জানায়।
স্বর্ণালী খাতুন বলেন, টাকা পরিশোধ করার পর সোনার অলংকার না পেয়ে পরের দিন আসতে বললে সরল বিশ্বাসে বাড়ি ফিরে আসি। পরদিন সকাল ৭টার দিকে তার বাসায় গেলে দিব দিছি বলে নানারকম টালবাহানা শুরু করে। সেদিন দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার বাসা থেকে আসি। সর্বশেষ গত ২২ মে আবার তার বাড়িতে গিয়ে সোনার জিনিসপত্র ফেরত চাইলে একইভাবে টালবাহানা করতে থাকে। এর প্রতিবাদ করলে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। গালিগালাজ দিতে নিষেধ করলে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। তিনি আরও বলেন, শুধু মারধর করে ক্ষান্ত হয়নি, উল্টো আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে সাদ্দাম ওরফে প্রার্থনা হিজরা। টাকা শোধ করার পরও এমন অত্যাচার ও ভয়ভীতি দেখানোর কারনে বর্তমানে জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আশাকরি সুষ্ঠু বিচার পাব।
স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদা বেগম, তরিকুল ইসলাম জানান, সাদ্দাম ওরফে প্রার্থনা হিজরা বিভিন্ন সময়ে মানুষকে টাকা ধার দেয়। কিন্তু ধার নেয়া ব্যক্তিদের সাথে সে নানাভাবে প্রতারণা করে। এমনভাবেই স্বর্ণালী খাতুন টাকা শোধ করলেও তার স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দিচ্ছে না। তাকে মারধর ও হুমকি প্রদান করেছে সাদ্দাম ওরফে প্রার্থনা হিজরা। অভিযোগ অস্বীকার করে এবিষয়ে সাদ্দাম ওরফে প্রার্থনা হিজরা (তৃতীয় লিঙ্গ) বলেন, আমাকে টাকা ফেরত দেয়ার পরপরই তার গহনা ফেরত দিয়েছি। কিন্তু আমাকে হয়রানী করতেই এমন মিথ্যা অভিযোগ করছে স্বর্ণালী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।