মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ হচ্ছে বর্তমান সরকারের বিশেষ উদ্যোগের অন্যতম। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের লক্ষ্য/উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সেই লক্ষ্য নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ৬৫৮ টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৩টি বাড়ি এখনো নির্মাণাধীন রয়েছে। বাড়িগুলোর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৯৫টি, ২য় পর্যায়ের ১ম ধাপে ৩০০টি, ২য় ধাপে ২০০টি, তৃতীয় ধাপের ১ম পর্যায়ে ৫০টি ও ২য় ধাপে ১৩টি। নির্মাণাধীন বাড়িগুলো উপকার ভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্ত এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০টির অধিক বাড়িতে উপকারভোগীরা উঠেনি। তবে এর মধ্যে আবার কেউ কেউ রাত্রে বাড়িতে ঘুমাতে আসে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছ।
সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক জানা গেছে, উপজেলার চৌডালা, গোমস্তাপুর, বোয়ালিয়া, রহনপুর ও পার্বতীপুর এই ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টির অধিক বাড়িতে উপকারভোগীরা উঠেনি। এর মধ্যে ৫টি বাড়ি বরাদ্দ প্রাপ্তদের নিকট থেকে নিয়ে অন্যদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান। বাড়িতে না থাকার বিষয়ে উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ি সংলগ্ন রাস্তা, পানীয় ও জলের সমস্যা, বিদ্যুৎতের সমস্যা, কর্মস্থল থেকে অনেক দূরে হওয়ায় এবং বাড়িগুলো বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় তাদের পৈত্রিক বাসস্থান ছেড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িতে যেতে নারাজ তারা। নয়াদিয়াড়ী গ্রামের এক উপকারভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গোঙলপুরে নির্মাণাধীন বাড়িতে থাকতে ভালো লাগছে না। তাই কর্তৃপক্ষকে বলবো আমার প্রাপ্ত বাড়ি অন্য একজনকে দিয়ে দিতে। গোমস্তাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান জানান,আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলোতে যারা থাকছে না তাদের তালিকা তৈরি করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের’কে বলা হয়েছে। তালিকা হাতে পেলে যারা বাড়িতে থাকতে চাইছে না তাদের বাসস্থানের বরাদ্দ বাতিল করা হবে। বাড়িগুলোতে পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা, সংযোগ রাস্তা না থাকার কারণে উপকারভোগীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। প্রতিবেদকের এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তা করার জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকায় , বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কিছুটা সময় প্রয়োজন। আর পানির সমস্যা সমাধানের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানের জন্য নেসকো’কে বলা হয়েছে। গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা খাতুন বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলোতে যারা থাকছে না। তাদের তালিকা চেয়ে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে পত্র দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ আমাদের সেই তালিকা পাঠালে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গোঙ্গলপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সঙ্গে ইটভাটা রয়েছে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকল্পের মধ্যে ইটভাটা যদি থেকে থাকে তাহলে, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িগুলোতে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ইতিপূর্বে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।