রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশের মধ্যেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৩ নভেম্বর সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এই তফসিল ঘোষণা করতে পারেন বলে ইসির একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
ইসি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী তফসিল ঘোষণার বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গভবনে যাবেন পুরো কমিশন। তাঁর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে ভোট অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করা হবে। এরপর ১০ ও ১১ নভেম্বর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) সাথে বৈঠক ও নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার অ্যাপ উদ্বোধনের কর্মসূচি রয়েছে ইসির। তাদের মতে, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা কর্মসূচি রয়েছে কমিশনের। এজন্য ১২ নভেম্বরের আগে তফসিল বিষয়ে কমিশন বৈঠক করা সম্ভবপর নাও হতে পারে। ওইদিন বৈঠক করে সময় নিয়ে ভাষণের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ১৩ নভেম্বরের আগে তফসিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা কম। বেশকিছু কাজ আছে কমিশনের, সেগুলো শেষ করে ১৩ কিংবা ১৪ নভেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে পারেন সিইসি। ওই ভাষণেই ঘোষণা করা হবে আসন্ন নির্বাচনের তফসিল। তবে এক্ষেত্রে ১৩ নভেম্বরকেই প্রাধাণ্য দিচ্ছেন অনেকে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম বুধবার জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর কমিশন। এরইমধ্যে সব প্রস্তুতি গুছিয়ে আনা হয়েছে। এখন সম্পূর্ণরূপে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মতো পরিবেশ রয়েছে। তাই পূর্ব ঘোষিত সময়েই (নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। জাহাংগীর আলম বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়োজন করতে হবে।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী, সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হবে। এই হিসাবে ৯০ দিনের নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে ১ নভেম্বর থেকে। একই হিসাবে আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ অবস্থায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকলেও নির্বাচন কমিশন সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। নির্বাচন আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতিও তারা গুছিয়ে এনেছে।
সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ছয় কোটি সাত লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন, নারী ভোটার সংখ্যা পাঁচ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। এ ছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২ জন। নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১০৩টি। ভোটকক্ষ রয়েছে দুই লাখ ৬০ হাজারের মতো।
Valo hobe