শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০১:২০ পূর্বাহ্ন
আদিবাসী অধিকার আন্দোলনে অন্যতম যোদ্ধা ও সংগঠক জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন (৬৬) ১৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) আনুমানিক গত রাত ১:২৫ টায় নিজ বাড়িতে শ্বাসযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে পরলোক গমন করেছেন। গতরাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয় এবং হাসপাতালে নেওবার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স আসার আগেই তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে সকলকে ছেড়ে চলে যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য অনুসারী ও শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ গভীর শোক এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে। তিনি জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিসেবে ২০১১ সাল থেকে অভিভাবক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর ৫ কেন্দ্রীয় সম্মেলনে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি ২০১১ সালে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে দীর্ঘদিন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও বলিষ্ঠ কন্ঠন্বর ছিলেন। সমতলের তথা দেশের আদিবাসী আন্দোলনের একজন অভিভাবক ছিলেন তিনি। আদিবাসীদের ৯ দফা দাবি আদায়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন। তিনি শুধু আদিবাসী নয় প্রান্তিক, দরিদ্র, শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতী মানুষের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন সারাজীবন। অকুতোভয় এই সংগ্রামী যোদ্ধার মৃত্যু হলেও তিনি বেঁচে থাকবেন লড়াই-সংগ্রামের আন্দোলনের পুরোধা হিসেবে। তিনি আদিবাসীদের অধিকার ও দুঃখ দুর্দশার কথা সংসদে তুলে ধরার লক্ষ্যে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৬ (ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর, বিরামপুর, ও নবাবগঞ্জ) আসনে প্রতিদন্দ্বিতাও করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ সরেন দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বারকোনা গ্রামে ১৯৫৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর দারকাল সরেন ও সুমি টুডু দম্পতির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। শিক্ষাজীবনে তিনি বারকোনা বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, হাবড়া উচ্চ বিদ্যালয়, পার্বতীপুর, দিনাজপুর থেকে মাধ্যমিক ও দিনাজপুর সঙ্গীত কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে রাজশাহীর শাহ্ মখদুম কলেজ থেকে ডিগ্রী সম্পন্ন করেন।
