গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের বিশ্ব ইজতেমায় দলে দলে আসা মানুষ মূল ময়দানের খিত্তায় জায়গা না পেয়ে আশপাশের সড়কে অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে বয়ান শোনার ও ইবাদতে মশগুল থাকার আয়োজন করছেন। গত দুদিনের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও ভোর থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপে করে দলে দলে ইজতেমায় আসছেন। তাদেরকে সুশৃঙ্খলভাবে ময়দানে পৌঁছে দেওয়া ও সড়কের পাশে অবস্থান নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর হতে দেখা গেছে। শুক্রবার ভোরে আম বয়নের মধ্য দিয়ে ইজতেমার মূল কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার থেকেই মূল মঞ্চে প্রাথমিক বয়ানের কাজ শুরু করেছেন মুরুব্বিরা। প্রাথমিক বয়ান করেন দিল্লির মাওলানা আহমদ লাট, তা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা ওমর ফারুক। ময়দানে আগতরা নিজেদের প্রস্তুতির পাশাপাশি খিত্তায়-খিত্তায় বসে সেসব বয়ান শুনছেন। তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আলাদাভাবে। জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি। চার দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি। দুপুরে ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, এখনও বাস, ট্রাক, ট্রেন ও হেঁটে দলে দলে ইজতেমায় আসছেন মানুষ। তাদের কাঁধে বা পিঠে ঝুলছে ময়দানে অবস্থানের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ভারী ব্যাগ মাথায় নিয়েও অনেকে আসছেন ময়দানে। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ আগমন অব্যাহত থাকবে বলে জানান আয়োজকরা। তবে আগতদের অনেকেই ময়দানে যেতে পারছেন না। তারা আশপাশের সড়ক ও খালি জায়গায় ত্রিপল ও পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী তাঁবু বানাচ্ছেন। সেখানেই চট বিছিয়ে শীতের কাপড় নিয়ে বসছেন।
এ কারণে কামারপাড়া সড়ক, বাটা রোড, টিএন্ডটি রোড ও এর আশপাশের সড়কে সাধারণ যানবাহন বন্ধ হয়ে গেছে। এসব সড়ক দিয়ে শুধু বিদেশি মেহমানদের গাড়ি বিশেষ ব্যবস্থায় চলাচল করতে দেখা গেছে। আয়োজকরা জানান, এবার ইজতেমার প্রথম দিনই শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তুরাগ তীরে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবারই জুমার নামাজে অংশ নিতে তাবলিগের অনুসারী ছাড়াও গাজীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে আসা মানুষ বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিতে থাকেন। ফলে সন্ধ্যার পর ও রাতে অনেক মানুষ ইজতেমাস্থলে জড়ো হবেন বলে আশা করছেন আয়োজকরা। ময়দানে স্থান না পেয়ে অনেকে ইজতেমাস্থলের আশপাশের বহুতল ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন। খোলা আকাশের নীচে ত্রিপল বা পলিথিন টানিয়ে তিনদিন কাটিয়ে দেবেন বলে জানান ময়মনসিংহ থেকে আসা আব্দুল করিম। তিনি বলছিলেন, তার দলের মত আরও অনেকে আশপাশের ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন। ইজতেমাকে কেন্দ্র করে মাঠের আশপাশে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের পণ্যের অস্থায়ী দোকান ও হোটেল। এসব দোকানে বিক্রির ধুম পড়েছে।