চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাহজানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে ওয়ারিশ সনদের বিনিময়ে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওয়ারিশ সদন প্রতি ৩০০ টাকা করে নেন চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম ও ইউপি সচিব আনোয়ার হোসেন। চেয়ারম্যানের দাবী, আমরা রেজুলেশন করে টাকা নেয় ১০০ টাকা। তবে ইউএনও বলছেন, এসব সনদ নাগরিক অধিকার। বিনামূল্যে এসব সনদ উত্তোলন করতে পারবেন ইউনিয়নের বাসিন্দারা। জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুজ্জামান। পেশায় তিনি দলিল লেখক। অফিসের কাজে তার নিকটতম দুজন আত্মীয়ের জন্য ওয়ারিশ সনদের আবেদন করেন ইউনিয়ন পরিষদে। নিয়মমাফিক আবেদন করেন, সনদপত্র নিতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় তাকে। দুটো ওয়ারিশ সনদপত্র নিতে গেলে তাকে দিতে হবে ৬০০ টাকা। এ ঘটনায় তিনি প্রতিবাদ করতে গেলে ওই পরিষদের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলামসহ সচিব আনোয়ার তাকে প্রাণ নাশকের হুমকিও দেন। কামরুল বলেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ ৫টি সরকারী প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দায়ের করেছি। সরকারতো বিনামূল্যে ওয়ারিশ সনদ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমি সনদ পত্র নিয়ে এসেছি। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ গুলো প্রত্যাহার না করায় প্রতিনিয়ত আমাকে প্রাণনাশকের হুমকি দিচ্ছে। ওই ইনিয়নের নরেন্দ্রপুর এলাকার রাজাপাড়ার বাসিন্দা মিজানুর রহমান ফটিক। তিনি জমি খারিজের জন্য তার দাদা, দাদি আর বাবার ওয়ারিশ সনদপত্র তুলেছেন ৯০০ টাকার বিনিময়ে। একটি সার্টিফিকেটের ৩’শ টাকা করে ৯০০ টাকা দিতে হয়েছে ওই পরিষদের সচিব আনোয়ার হোসেনের হাতে। টাকাগুলোর বিনিময়ে রশিদ চাইতে গেলে আমাকে হেনস্তার শিকার হতে হয়। কাজের চাপে একপ্রকার বাধ্য হয়েই ওয়ারিশ সনদপত্র তুলতে হয়েছে মিজানকে। নরেন্দ্রপুর এলাকার সুজন পাড়ার আরেক বাসিন্দা রবিউল। তার শশুর একজন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনিও তিনশ টাকা গচ্চা দিয়ে পেয়েছেন তার শশুরের ওয়ারিশ সনদ। রবিউল জানান; চলতি মাসের মে মাসের শেষের দিকে কাঠখোড় পুড়িয়ে তিনশ টাকার বিনিময়ে আমার শশুরের ওয়ারিশ সনদ পেতে হয়েছে। আমার শশুর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তার জন্যও সনদের টাকা ছাড় দেয়নি। অভিযুক্ত শাহজাহানপুর ইউনিয়নের সচিব আনোয়ার হোসেন বলেন, ওয়ারিশ সনদ করতে বেশি কিছু লাগেনা, ১০০ টাকা প্রয়োজন। শাহজাহানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম বলেন, কামরুল আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে, সব মিথ্যা। মিথ্যা বলবো না, আমরা ওয়ারিশ সনদে ১০০ টাকা করে নিয়ে থাকি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহান প্রতিবেদককে বলেন, ওয়ারিস সনদপত্র নিতে কোন টাকা লাগেনা। সকল ইউনিয়ন পরিষদ বিনামূল্যে এ সনদ দিয়ে থাকেন। শাহজাহানপুর ইউনিয়নে ওয়ারিস সনদপত্র তুলকে গিয়ে একজন হেনস্তার শিকার হয়েছে, এমন খবরের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।