অতি বন্যায় কমেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের দাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বাজারে আমের দাম কমেছে। চাষিদের দাবি দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় কমেছে আমের দাম। তবে বাহিরের আম ব্যাপারীরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় অন্য জেলার বাজারে আম সরবারহ করতে পারছেন না তারা। আম চাষি মহব্বত আলী বলেন, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আষাঢ়ে বর্ষণের কারণে বাজারে আম নামাতে পারেনি চাষিরা। এ দুদিনে আমের দাম মনে ৩০০-৫০০টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্ষার পানি যদি কম হয় তাহলে আমের দাম ফের বাড়বে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আমের দাম বেশি আছে। গতবছর ক্ষিরশাপাত আম বিক্রি হয়েছিল ১৫০০-২০০০ টাকা মনে। কিন্তু এবার ক্ষিরাপাত আমের রকমভেদে ২৫০০-৪০০০ টাকা মন পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সুত্রে জানা গেছে, এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৬২২ বিঘায় মোট ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৪০ টি আম গাছ চাষাবাদ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার ৩০ হাজার ৯১১ বিঘা বেশি জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এ বছরে আম উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন। আম চাষি আবুল হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা। বন্যার কারণে বাহিরের জেলায় আম কম সরবারহ কমে গেছে। কাঁচামাল পঁচনশীল হওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। গত দুইদিনে আম পেড়ে বাজারে আনতে পারিনি, কাচামাল নষ্ট হওয়ার ভয়ে কম দামেই বিক্রি করেছি। বন্যা অবস্থা আরও অবনতি হলে আমের দাম কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। গতবছরের তুলনায় আমের দাম বেশি হওয়ায় ব্যাপারীদের মন ভালো নেই। তাদের দাবি ৩ হাজার টাকা মনে আম কিনে বাহিরের জেলায় বেশি দামে মানুষ আম কিনবে না। যাতায়াত ভাড়াসহ কুলি খরচে আমের দামে প্রভাব পড়বে। নিয়ামতুল্লাহ নামের এক ব্যাপারী বলেন, গতবছর ফজলি আমগুলো ৭০০-১০০০ টাকা মনে কিনেছিলাম। এবার ঝড়ে পড়া আম গুলোই ৯০০-১০০০ টাকা মন। ভালো মানের আমগুলো বিক্রি হচ্ছে ২০০০-২৫০০টাকা মন পর্যন্ত। সময়ের ব্যবধানে আমের দাম আরও বাড়তে পারে। সেরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যাপারী বলেন, এখান থেকে আম কিনে বাহিরের জেলায় কম দামে বেচা যায়না। ফলে মানুষজন আম কিনতে অনিহা প্রকাশ করেন। এছাড়াও আম বাহিরের জেলায় সরবারহ করতে পরিবহন ভাড়াসহ কুলি খরচও লাগে। সব মিলিয়ে আমের দামে প্রভাব পড়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মৌসুমে আমের দাম বেশি। বাগানে আমও কম আছে। বন্যার কারনে বাহিরের জেলা গুলোতে আম সরবরাহ কমতে পারে। এজন্য আমের দামে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।