বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের খবর গত ৫ই আগস্ট দুপুরে সারাদেশের ন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বিজয় মিছিলে মিছিলে সামাবেত হয় বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী দলসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। সে সুযোগে দুষ্কৃতীরা বিভিন্ন মামলার জব্দ কৃত আলামত দুই দফায় লুটপাট চালায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতের মালখানা থেকে লুণ্ঠিত মালামালের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে রবিবার(১১ আগষ্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৬টি পিস্তল, ৩টি ওয়ান শ্যুটারগান, ২৫ রাউন্ড গুলি, ৭টি ম্যাগজিন, ১৯টি মোটরসাইকেল, ৩ কেজি হেরোইন, ১ কেজি গাঁজা, ৫৫ বোতল ফেনসিডিল, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী।
এসব সামগ্রী বিভিন্ন মামলার আলামত, যা গত ৫ আগষ্ট সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দিন সন্ধ্যা থেকে রাতব্যাপী দফায় দফায় মালখানা থেকে লুট হয়। আদালত পুলিশ পরিদর্শক এসএম জাকারিয়া ও মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনার পর আদালত কর্তৃক গঠিত হয় ৩ সদস্য বিশিষ্ট লুণ্ঠিত মালামালের পরিমান নির্নয় কমিটি। অতিরিক্ত চীফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু তাহেরের নেতৃত্বে কমিটিতে রয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আবু কাহার ও মো. তৌহিদ্দুজ্জামান। কমিটি পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। লুণ্ঠিত মালামালের তালিকা প্রস্তুতের পর এ ব্যাপারে মামলা করা হবে। আদালত পুলিশ আরও জানায়, মালখানার তালা ও কলাপসেবল গেটসহ দরজা ভেঙ্গে ভয়াবহ এ লুটের পর পৌর কাউন্সিলর, আইনজীবী সমিতির সদস্যসহ বিভিন্ন মহলের তৎপরতায় ‘মাধ্যমের’ সাহায্যে গত ৮ আগষ্ট সেনা ক্যাম্পে কয়েকটি মোটরসাইকেল জমাদানের মাধ্যমে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। যা অব্যহত রয়েছে। এখনও অস্ত্রসহ বহু মালামালের সন্ধ্যান মেলেনি ও পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় প্রয়োজন বলেও জানায় পুলিশ। এদিকে, রবিবার দুপুরে মালখানা পরিদর্শন করেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহা: আদীব আলী, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন, পুলিশ সুপার ছাইদুল হাসান বিপিএম-পিপিএম, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম মাহমুদুর রশিদ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাঁপাইনবাবগঞ্জে দ্বায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা, জেলা আনসার এ্যাডজুট্যান্ট, র্যাব-৫ কর্মকর্তা, ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটসহ বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তাগণ। উল্লেখ্য, ওই রাতে মালখানার পাশে অবস্থিত জেলা রেকর্ড রুম ও জেলা টেজারিতেও হামলা করে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসের চেষ্টা চালানো হয় যা সফল হয়নি। পুরো ঘটনাটি জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করে।