আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। মূলত লোভের বশবর্তী হয়ে দুর্নীতিমূলক, বিদ্বেষাত্মক এবং বেআইনিভাবে রায় দেওয়াসহ অসত্য ও জাল-জালিয়াতিমূলক রায় সৃষ্টি করার অভিযোগে তার নামে এ মামলা করা হয়। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থাকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন মামলাটি করেন। বিচারপতি এ বি এম খাইরুল হকের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২১৯ ও ৪৬৬ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
গত ২৬ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় সাবেক প্রধান বিচারপতি ও সদ্য পদত্যাগ করা আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন এবং জালিয়াতির অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আযম।
এর আগে ১৮ আগস্ট বিচারক হিসেবে ‘দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলক’ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় প্রদান ও জাল রায় তৈরির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম মামলার আবেদন করেন। মামলার আবেদনে মোজাহিদুল উল্লেখ করেন, বিচারপতি খায়রুল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় প্রভাবিত হয়ে এবং তার অবসর পরবর্তী ভালো পদায়নের লোভের বশবর্তী হয়ে দুর্নীতিমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে খুশি করার অভিপ্রায়ে ২০১১ সালের ১০ মে সংক্ষিপ্ত আদেশটি পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর উক্ত আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, আসামির বেআইনি রায়ের দরুন সারা দেশের ভোটারদের অধিকার হরণ করা হয়েছে এবং উক্ত অবৈধ রায়ের কারণে শেখ হাসিনা পরপর তিনবার অবৈধভাবে সরকার গঠন করার সুযোগ পায় এবং দেশে অরাজকতা কায়েম করে। এ বিষয়ে শাহবাগ থানার এস.আই মাইনুল বলেন, সাবেক বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে মো. মোজাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি এজহারের কপি আমরা পেয়েছি। আমরা সেটিকে গ্রহণ করেছি এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়।