গোদাগাড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঘুষ ছাড়া দলিল সই করেন না সাব-রেজিস্টার। এ অফিসে একেকটি দলিলে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষের লেনদেন হয়। দলিলের সার্টিফাইড কপি, পাওয়ার অব অ্যাটর্নী থেকে বিক্রয় কবলা দলিল রেজিষ্ট্রি, অফিস খরচ সহ নানান কথা বলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। লাইসেন্স বাতিল হওয়ার শঙ্কায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহুরী বলেন, রেজিস্ট্রার বিক্রয় কবলা দলিল প্রতি ১৪০০ টাকা, পাওয়ার অব অ্যাটর্নীর বলে বিক্রয় কবলা দলিল প্রতি ৩০০০ টাকা, সার্টিফাইড কপি প্রতি ৮০০ টাকা ও দলিল প্রতি অফিস খরচ ৪০০ টাকা নিয়ে থাকেন। প্রতি মাসে গড়ে প্রায় সাড়ে ৯’শটি দলিলে সই করেন। এতে মাসে প্রায় ১৬/১৭ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্য করেন সাব রেজিষ্ট্রার। গোদাগাড়ী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে গত ২৩/২৪ অর্থ বছরে মোট দলিল হয়েছে ১১১৪৫টি এখান থেকে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৩ কোটি ৮১ লক্ষ ১৪ হাজার ৫৯৪ টাকা। এর বাইরে জমি রেজি: করতে আসা অসহায় গরিব মানুষের পকেট কেটে ঘুষ বাণিজ্য করেছেন সাব রেজিষ্ট্রার প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এতেও তাদের হয় না। দরবেশ বেশে বসে থাকা সাব রেজিস্ট্রার দিন শেষে বাড়ী চলে যাওয়ার পর দলিল প্রতি ঘুষের টাকাগুলো তার একান্ত সহকারি নৈশপ্রহরী টাকাগুলো সাব রেজিষ্ট্রার এর বাড়ীতে পৌছে দেন বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। মহুরীর দেয়া তথ্য মতে প্রতি সপ্তাহের ৩ দিনে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন সাব রেজিস্ট্রার। সমস্ত ঘুষের টাকা নৈশপ্রহরী শাহিনের মাধ্যমে গ্রহণ করেন তিনি। এছাড়াও জমির ত্রুটিপুর্ণ কাগজের দলিল ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে সই করে থাকেন। হিসেব অনুযায়ী প্রতি মাসে ১৫/ ২০ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্য হয় গোদাগাড়ী সাবরেজিস্ট্রি অফিসে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোদাগাড়ী অফিসের সাবরেজিস্টার বলেন, আমার এখানে সমিতির নাম করে কেউ টাকা নিতে পারবে না। সমিতি বন্ধ করা হয়েছে। তার নিজের ঘুষ বাণিজ্য সম্পর্কে বলেন, আমার নামে কেউ টাকা নিয়ে থাকলে বলেন আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আপনার নামে যে টাকা নেয়া হয় সেটা সকল মুহুরিই বলছেন সে ক্ষেত্রে আপনি কয় জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি তিনি। একজন সাংবাদিক জানান, আমি গত ২০ জুলাই জমি রেজিষ্ট্রি করেছি, আমার কাছ থেকেও টাকা নেয়া হয়েছে এ বিষয়ে কি বলবেন? এবিষয়েও তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি। গোদাগাড়ী সাব রেজি: অফিসটি যেন দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এ দূর্নীতির করাল গ্রাস থেকে মুক্তি চায় এলাকার জনসাধারণ।