পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিএনপির চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার গণমাধ্যমকে বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে গত ২১ আগস্ট দেড় মাসের মতো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় আনা হয় খালেদা জিয়াকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। গত ২৩ জুন তার সফল অস্ত্রোপচার হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য যেকোনো সময় খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্য নেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাতে ম্যাডামকে এভারকেয়ার হাসপাতালে আনা হয়েছে। বোর্ড উনার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট পর্যালোচনা করে পরিবর্তী ব্যবস্থা নেবে মেডিকেল বোর্ড। খালেদা জিয়াকে কেবিনে রাখা হয়েছে। রাত ১টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন গুলশানের বাসা থেকে প্রাইভেট কারে রওনা হন। ১টা ৩৫ মিনিটে হাসপাতালে পৌছার পর তাকে কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি আরও বলেন, ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে তার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তখন তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে পাঁচ মাসের বেশি সময় হাসপাতালে থাকার পর বাসায় নেওয়া হয়। পরে আবার অসুস্থ হলে চলতি বছর ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। এর আগে সবশেষ গত ৮ জুলাই গভীর রাতে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। এরপর আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে সাজামুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন এক মাস ১২ দিন পর ২১ আগস্ট বাসায় ফেরেন। তখন থেকে তার চিকিৎসা বাসায় চলছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতেও চেষ্টা চলছে।