রাজশাহীতে স্ত্রী’র ২৪টি ব্যাংক চেক জালিয়াতি করে বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে আত্মগোপনে আছেন মো: স্বপন (৪১) নামে এক প্রতারক। এদিকে এনজিও-র মামলা কাধে নিয়ে আদালতে বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছে ভুক্তভোগী গৃহবধূ। প্রতারক স্বামী মো: স্বপন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নং ওয়ার্ডের রামচন্দ্রপুর, ঘোড়ামারা, বোয়ালিয়া এলাকার মো: আরমান আলী শেখের ছেলে। জানা গেছে, প্রতারক স্বপনের সাথে মোসা: আয়েশা খাতুন তুলি’র ১২ই এপ্রিল ২০১৯ সালে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছু দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর তুলি’র স্বামী স্বপন দ্রুত আর্থিক লাভের কথা উল্লেখ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেখে ঋণ গ্রহনের সুবিধার্তে ব্যাংক হিসাব নং ০২০০১৯০০৬০০২৫ খুলে দেয়। পরবর্তীতে উক্ত হিসাব নম্বরের বিপরীতে চেক ইস্যু হলে স্বপন ভুক্তভোগী তুলিকে প্রলুব্ধ ও বাধ্যকরনের মাধ্যমে ব্যবহারে সুবিধার্থে চেকের পাতাগুলোতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। উক্তরূপ চলতে থাকাকালীন তুলি ও স্বপনের সংসারে বনিবনা না হওয়ার প্রেক্ষিতে তুলি স্বপনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করতে বাধ্য হয়। ইতিমধ্যে তুলি’র বিরুদ্ধে উত্তরণ সেভিংস এন্ড ক্রেডিট কো-অপারেটিভ সোসাইটি, লিমিটেড, রাজশাহী এন.আই.এ্যাক্টের ১৩৮ ধারার মামলা দায়ের করে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলার প্রেক্ষাপটে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাধ্য হয়ে বাবার বাড়ীতে চলে আসার সময় তার স্বাক্ষরিত চেকগুলো নিয়ে আসতে চাইলেও প্রতারক স্বপন জোর পূর্বক চেক গুলো নিজের দখলে রেখে দেয়। ভূক্তভোগী গৃহবধূ তার বাবার বাড়িতে অবস্থানকালে সমূদয় বিষয় বাবার পরিবারের সবাইকে অবহিত করলে তারা জানতে পারেন নিম্নলিখিত চেকগুলো স্বপন জালিয়াতির করেছে এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন গ্রহন সহ বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ীতে সংরক্ষন করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। কাজেই চেকগুলো উদ্ধারের উদ্দেশ্যে স্বপনের বসত বাড়ীতে সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যুপূর্বক চেকগুলো উদ্ধারের আদেশ দানে বিজ্ঞ আদালতের শরণাপন্ন হন ভূক্তভোগী গৃহবধূ। ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট সাবিহা সুলতানা প্রতারক স্বপনের কাছে থাকা ২৩ চেক আদালত কর্তৃক বাতিল বলিয়া রায় প্রদান করেন। ভুক্তভোগী তুলি’র আইনজীবী জানান, তুলি স্বপন দম্পতির বিয়ে পর সম্পর্ক টিলেঢালা ভাবে চলছিলো তাদের ঘরে একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বপন একজন অর্থ লোভী মানুষ সে বিয়ের কিছু দিন পর থেকে তুলিকে তার বাবার বাড়িতে আসতে দিতনা, বিভিন্ন সময় এনজিওতে লোনের জন্য বিভিন্ন কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিত, তুলি স্বাক্ষর দিতে না চাইলে তার উপর চালানো হতো শারিরীক ও মানসিক টর্চার। বিজ্ঞ আদালত তুলির আবেদনের প্রেক্ষিতে তার স্বাক্ষরিত ২৩টি চেক বাতিল করে রায় প্রদান করেন। বাতিলকৃত চেক নাম্বার গুলো নিম্নে দেওয়া হলো – ও.ঈ.ই ওঝখঅগও ইধহশ খরসরঃবফ এ হিসাব নং-০২০০১৯০০৬০০২৫ এর চেক নং- ৩৪৪৫২৪১, ৩৪৪৫২৪৪, ৩৪৪৫২৪৫ ৩৪৪৫২৪৭, ৩৪৪৫২৫২, ৩৪৪৫২৫৩, ৩৪৪৫২৫৪, ৩৪৪৫২৬৪, ৩৬০৮১৬১ থেকে ৩৬০৮১৭৫-২৩।