শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে পড়েছে নাটোরের প্রাণ এগ্রো কোম্পানি। বেশ কিছু দিন ধরে চলা শ্রমিকদের বিক্ষোভ তীব্রতর হলে কারখানাটি আগামী মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) পর্যন্ত ৫ দিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নাটোর একডালা এলাকায় অবস্থিত প্রাণ এগ্রো কারখানায় শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এর আগেও শ্রমিকরা তাদের বেতন বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরসহ কর্তৃপক্ষের কাছে ১৩ দফা দাবি করেন। এ দাবির প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ কয়েক দফা দাবি মেনে নিলেও শ্রমিকরা সব দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পুনরায় আবার বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে আজ শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এ প্রাণ এগ্রো কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শ্রমিকেরা আবারও কারখানায় বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় শ্রমিকরা কারখানার জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) হযরত আলীকে তার অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে নাটোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাছুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইন কারখানায় এসে শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমস্যা নিরসনে আলোচনা করেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জেনারেল ম্যানেজার হযরত আলীকে রাতে কারখানা থেকে উদ্ধার করে বাসায় পৌঁছে দেন। কারখানার নারী শ্রমিকরা বলেন, পরিশ্রম অনুযায়ী আমাদের বেতন কম দেয় কোম্পানি। বছরে বেতন বাড়ানোর কথা থাকলেও তা বাড়ানো হয় না। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে কাজ করি। আমাদের সবদিক থেকে ঠকানো হয়। তাই আমরা শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। এ বিষয়ে প্রাণ এগ্রো কারখানার কর্মকর্তার ফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি। নাটোরের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মাছুদুর রহমান বলেন, আন্দোলনের খবর পেয়েই গতকাল আমিসহ পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর টিম কারখানায় পৌঁছাই এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। শ্রমিকরা তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবি জানান। শ্রমিকদের দাবি আদায়ে মালিকপক্ষ আলোচনা করবেন। আশা করছি, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পুরন করা হবে।