‘কন্যাশিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস পালিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সোমবার দুপরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়। ‘শিশুদের প্রতি সব ধরনের ভেদাভেদ ও বৈষম্য দূর’ করে সচেতনতা তৈরিতে প্রতিবছর বাংলাদেশে দিবসটি পালন করা হয়। ২০০৩ সালে কন্যাশিশুদের সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৩০ সেপ্টেম্বরকে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস ঘোষণা করা হয়। জাতীয় কন্যাশিশু দিবস আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমেদ মাহাবুব-উল-ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মোসাঃ রেসমা খাতুন, জেলা মৎস্য অফিসের সহকারী পরিচালক ড. এলিজা খাতুন, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মোসাঃ হাসিনা খাতুন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোসাঃ সাহিদা আখতার। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মতিনসহ সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, প্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা। আলোচনা সভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের প্রশিক্ষক মোসাঃ শিরিনা খাতুন ও গীতা পাঠ করেন প্রশিক্ষণার্থী শিবালী।
সভায় বক্তারা বলেন, শিশুদের প্রতি সব ধরনের ভেদাভেদ ও বৈষম্য দূর করতে হবে। একটা সময় কন্যা শিশুর চেয়ে পুত্র শিশু বেশি চাইত পিতা-মাতারা। কন্যার জন্মগ্রহণে খুশি হতে পারত না পিতা-মাতারা। কারণ, তখন কন্যা শিশুর চেয়ে পুত্র শিশুকে বৃদ্ধ বয়সের অবলম্বন মনে করা হত। তাই কন্যা শিশুর চেয়ে পুত্র সন্তানকে পরিবারে গুরুত্ব দেয়া হতো বেশি। তবে এখন সময় বদলেছে, তার সাথে বদলেছে পিতামাতার ধারণারও। নানারকম বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে কন্যা শিশুরা এখন পুত্র সন্তানের মতো সমানতালে পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে অবদান রেখে চলেছে। কন্যা সন্তানও বৃদ্ধ পিতা-মাতার অসহায় জীবনে সহায় হয়ে দেখা দিচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে পুত্র সন্তানের চেয়ে বাবা-মার প্রতি বেশি গুরুদায়িত্ব পালন করছে কন্যারা। কন্যা শিশু দিবসটি ঘিরে নানান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দিবসটি উদযাপনে অধীনস্ত জেলা ও উপজেলা দপ্তরগুলোকে কর্মসূচি গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহে ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছরের ১১ অক্টোবর পালিত হয় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। এদিকে প্রতিবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শিশু সপ্তাহ পালন করা হয়। এই শিশু সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস।