শোষণহীন সমাজ গঠন ও সমাজের সর্বস্তরে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনের শাসনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সোমবার সন্ধ্যায় বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ উপলক্ষে নগরীর শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত আইনজীবী এ্যানেক্স ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, কোর্ট অফিসার হিসেবে আইনজীবীর প্রথম কর্তব্য হলো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালত ও আইনের বিধিবিধানের প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন করে সহযোগিতা করা। বার ও বেঞ্চ একত্রে বিচারবিভাগ, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একে অন্যের পরিপূরক, প্রতিপক্ষ নয়-এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আইন পেশায় সফল হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নেই। আইন পেশায় সাফল্য পেতে প্রয়োজন একাগ্র, নিষ্ঠা, সততা, ধৈর্য্য ও পরিশ্রম। প্রধান বিচারপতি বলেন, আইন শেখা মানুষকে সহিষ্ণু হতে শেখায়। সম্মান করতে শেখায়। বিচার বিভাগের সম্মান রক্ষার দায়িত্ব সবার। বিচার বিভাগের ভাবমূতি নষ্ট হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ডে নিজেদের না জড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। বক্তব্যের শুরুতে প্রধান বিচারপ্রতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ জুলাই-অগাস্টের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে বলেন, যাদের আত্মত্যাগে নতুন বাংলাদেশের জন্ম নিয়েছে এদেশের মানুষ চিরকাল তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। এ সময় বরিশাল আদালতের বিচার কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, বরিশাল আদালতে বিভিন্ন পর্যায়ে ৪৭ জন বিচারক মামলা দায়েরের তুলনায় শতভাগ মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। কিছু কিছু আদালতের বিচারক মামলা দায়েরের তুলনায় শতভাগের বেশি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। পরিসংখ্যান অনুসারে, এ বছর আট হাজার ৯২৪টি দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার বিপরীতে আট হাজর ৯৩৬ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যা প্রমাণ করে, জন-আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশের পথে আমরা হাঁটছি। শত বাধা সত্ত্বেও আস্থা ও নিষ্ঠার সঙ্গে বিচারকরা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে চলছে। বরিশাল জেলা লিগ্যাল এইড কার্যক্রম সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে প্রি-কেস মামলায় এক কোটি ৬৮ লাখ ৩৪০ টাকা এবং পোস্ট-কেইস মামলায় দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা পক্ষকে আদায় করে দিয়েছে। যা আশাব্যাঞ্জক। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম কবির বাদলের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন আদালতের বিচারকসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।