এখনো বহাল তবিয়তে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন আওয়ামীলীগের দোষর বা প্রেতাত্না অফিসারগুলো। দীর্ঘদিন একই চেয়ারে বসে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন, বর্তমানেও বসে বসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে নানা স্বপ্ন দেখছেন। ‘কোনভাবে কোন ষড়যন্ত্রে যদি আবারও আওয়ামীলীগ সরকার চলে আসে তাহলে আবারও এসব অফিসারগুলো বিশেষ সুবিধা ভোগ করতে পারবে’। অবশ্য চাকুরী ও চেয়ার বাঁচাতে অনেক সময় ভোল্ট পাল্টিয়ে মনের বিরুদ্ধে হলেও বর্তমান সময়ে তাল বা সুর মিলিয়ে কথা বলছেন এসব কর্তারা। কিন্তু গোপনে এবং প্রকাশ্যে নানা কাজে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ কে আবারও প্রতিষ্ঠিত করতে চালাচ্ছেন নানা কৌশল। আওয়ামীলীদের কর্মী-সমর্থকদের সাথে রীতিমত আগের মতই রাখছেন সৌখ্যতা এবং যোগাযোগও। বিভিন্ন কাজে এখনো প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে, তাদের মতের বা সমর্থক গোষ্ঠি বা আওয়ামী ঘরের লোকজনদের। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনে জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তারা চরম অখুশি হওয়ায় কাজে তেমন একটা মনোযোগ বা দায়িত্ব বোধ নেই। অফিস করছেন মন মতো। এমনকি সরকারের চেয়ারে বসে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার কোন ভূমিকাও নেয় অনেক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার। এমন কি ভূমি দস্যুদের সাথে হাত মিলিয়ে অনেক অসহায় দরিদ্র পরিবার কে পথে বসিয়ে সরকারি সম্পত্তি বেহাত করে দেওয়া কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে কর্মরত আছেন জেলায়। এছাড়াও সরকারী সম্পত্তি রক্ষায় তাদের অনীতা বা অসহযোগিতাও লক্ষ্য করা গেছে। ছাত্র জনতার কোটা আন্দোলনের সময় এসব কর্মকর্তারা রীতিমত বিরোধীতা ও কৌশল করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে। যদিও শেষ পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে কিছু ছোট খাটো ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে কিছু রদবদল হলেও অন্যান্য দপ্তরে কোন কর্মকর্তার রদবদল হয়নি বললেই চলে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট জনদের মনে প্রশ্ন-কিভাবে এবং কোন কারণে এসব আওয়ামীলীগের দোষর কর্তারা এখনও একই চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন করছেন?। তবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বলছেন, একটু সময় লাগছে, তবে কম সময়ের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
বিশিষ্টজনেরা বলছেন, কোনভাবেই এসব কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ একটি জেলা বা দেশ গঠন সম্ভব নয়। এসব আওয়ামীলীগের প্রেতাত্না দায়িত্বে থাকলে সুবিধা বঞ্চিত মানুষগুলো তাদের অধিকার হারাবে, ক্ষতি হবে নতুনভাবে দেশ গড়ার কাজের, উদ্দেশ্য ও আকাংখার প্রতিফলন না হয়ে, উল্টো দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রের অংশিদার হবে বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালনকারীরা। এদিকে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে ৫ই অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনের পর আওয়ামীলীগের দোষর ও লগি বৈঠার কান্ডারী অফিসারগুলো দিনের পর দিন অফিসেও আসেননি, আসলেও কোনরকমে দিন পার করে চলে গেছেন। এসব কর্মকর্তারা সরকারের বেতন-ভাতাদী ভোগ করলেও মনোযোগ দিচ্ছেন না কাজে। এদিকে, জেলার কয়েকটি অধিদপ্তর আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে আওয়ামীলীগ পরিবার বা সংগঠনের নামে তালিকা করা প্রতিষ্ঠানের মাঝে অনুদান বা চেক বিতরণ করেছেন ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পরও। অন্যদিকে, করোনা ভাইসার দূর্যোগকালে সারাদেশের মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাতেও খাদ্য সহায়তার জন্য টিসিবি’র তালিকা তৈরী করা হয়। এই তালিকায় প্রায় সকল নামই আওয়ামীলীগ পরিবার বা সমর্থকদের তালিকাভূক্তি করা হয়। পরবর্তীতে করোনা ভাইরাস দূর্যোগ কেটে গেলে দ্রব্যমূল্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে টিসিবি’র মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করে সরকার। দূঃখজনক হলেও সত্য, জেলায় দরিদ্র অসহায় থাকলেও আওয়ামী পরিবারের লোকজনদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার জন্য করোনাকালে হওয়া তালিকায় টিসিবি পণ্য বিক্রি শুরু করে প্রশাসন। এখনো করা হয়নি করোনাকালে হওয়া তালিকার সংশোধন। ফলে বঞ্চিত রয়েই গেছে বিরোধীদল সমর্থিত বা সাধারণ অসহায়, দুঃস্থ ও দরিদ্র পরবারগুলো। এছাড়া আওয়ামীলীগ সমর্থক হওয়ার অনেক অর্থবিত্ত ও সামর্থ ব্যক্তিরাও এই তালিকায় থেকে করোনাকালে ও টিসিবির পণ্য ক্রয় করে সুবিধা ভোগ করেছেন, বর্তমানেও করছেন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলেও এখন পর্যন্ত এই তালিকা সংশোধন বা বিজোযন করার কোন উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এসব ঘটনায় রীতিমত ক্ষুদ্ধ বঞ্চিত সাধারণ মানুষ ও বিএনপি-জামায়াত নেতৃবৃন্দ এবং জেলার সুধিজনরা।
এদিকে, আওয়ামীলীগের দোষর ও আজ্ঞাবহদের পদোন্নতি দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব দেয়ায় আওয়ামী বিরোধী দল ও মতের কর্মকর্তারা বঞ্চিত হয়েছেন। কাজেই বঞ্চিতদের জায়গা করে দিতে হলেও এসব কর্মকর্তাদের অন্যত্র বদলী, রদবদল বা বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
জেলা যেসব কর্মকর্তা রীতিমত ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’, বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা, শেখ হাসিনার জয়, শ্লোগানে শ্লোগানে মেতে উঠে নিজেকে তুলে ধরে বিশেষ সুবিধা ভোগ করেছেন। এমনকি, সবই যেন নৌকায় চড়িয়ে মেলা, সভা-সমাবেশ করে আওয়ামীলীগ সরকারের বিশেষ নজরে আসলে আরও পদোন্নতি বা বিশেষ সুবিধা ভোগ করা যাবে, এজন্য কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন। আর বিরোধী দল বা মতের লোকদের বঞ্চিত করতে একটু দ্বিধা করেন নি। এসব কর্মকর্তা যদি এখনো একই চেয়ারে বসে থাকেন, তাহলে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আত্মদান এবং হাজার হাজার ছাত্র-জনতার আহত হওয়া, স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের লাল চক্ষু, বুলেটের আঘাত তোয়াক্কা না করে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মূল্যায়ন নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন সচেনত মহল।
অন্যদিকে, এই জেলায় অনেক কর্মকর্তা, ৬ বছর, ৫বছর, ৪ বছর, ৩ বছর, ২বছর, ১বছর ধরে আওয়ামীলীগ সরকারের দেয়া নির্দেশে জেলায় দায়িত্বে রয়েছেন। এখন রয়েছেন। বিগত জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন (সম্প্রতি বদলী) এর (এসিকোন) একজন সহকারী কমিশনার বিশেষ কর্মকর্তা হিসেবে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের দেয়া সকল কার্যক্রম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বাস্তবায়ন করেছেন এবং বিরোধী মতের মানুষ এবং গণমাধ্যমের উপর রক্ষচক্ষু দেখিয়েছেন, সেই একই ম্যাজিষ্ট্রেটকে বর্তমানে জেলা প্রশাসনের এনডিসির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি এখনো আওয়ামীলীগের দোষরদের সাথে আন্তরিকতা ও সৌখ্যতা বজায় রেখে চলেছেন। এসব কর্মকর্তার কাছ থেকে কিভাবে আওয়ামীলীগের বিপক্ষে বা বর্তমান সরকারের পক্ষে কাজ সঠিকভাবে পাওয়া সম্ভব? এমনটাই প্রশ্ন মিডিয়াকর্মীসহ অনেকের।
জেলায় স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জেলায় দায়িত্ব পালনকালে আ’লীগ সরকারের এজেন্টা বাস্তবায়ন ও আওয়ামীলীগের স্বেচ্ছাচারী সকল শ্লোগান ও কার্যক্রম বাস্তবায়নে অগ্রনী ভূমিকা পালনকারী কর্মকর্তাগণ হচ্ছেন- জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রহমান, জেলা বিএডিসি (বীজ)‘র সিনিয়র সহকারী পরিচালক এইচ এস জাহিদুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ শহীদুল ইসলাম, ২৫০শষ্যা বিশিষ্ঠ জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোঃ মাসুদ পারভেজ, জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দ্বায়িত্ব) মোঃ জিল্লুর রহমান, জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসাঃ উম্মে কুলসুম, সমাজ সেবা অফিসার (রেজিঃ) মোঃ ফিরোজ কবির, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোসাঃ সাহিদা আখতার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টি কালচার কল্যাণপুর সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. বিমল কুমার প্রামানিক, জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক (প্রজেক্ট নন রাজস্ব) মোঃ ফজলে রাব্বী, লাক্ষা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্ত ড. কাজী নজরুল ইসলাম, জেলা বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী অফিসার মোঃ শামীম ইকবাল, উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র সোনামসজিদ উপ-পরিচালক সমীর চন্দ্র ঘোস, জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ এমরান আলী প্রামানিক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সড়ক বিভাগ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরীন ঝিনুক ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (চঃদাঃ) মোঃ মেহেদী খান, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয় কর্তৃক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আল মামুনুর রশীদ, জেলা সমবায় অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল মান্নান, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ আখলাক-উজ-জামান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক(অঃদাঃ) মোঃ মাসুম আলী, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান, জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ শরিফুল ইসলাম, জেলা কালচারাল অফিসার মোঃ ফারুকুর রহমান ফয়সাল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জেছের আলী, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুর রাজ্জাকসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তাগণ। তবে সব কর্মকর্তা আওয়ামীলীগের আমলের হলেও কোন কোন কর্মকর্তা নিরপেক্ষভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছেন বা নিজেকে বিতর্কিত করা থেকে বিরত থেকেছেন।
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সাবেক এমপি ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোঃ হারুনুর রশীদ বলেন, বিগত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জেলায় বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা শেখ হাসিনা সরকারের সকল এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে, ফ্যাসিবাদী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সকল সহযোগিতা করেছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতন হলেও এখনো জেলায় এসব অফিসার কর্মরত রয়েছেন। অতি দ্রুত এদের জেলা থেকে বদলী করা দরকার। অন্যথায় এসব কর্মকর্তা স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে কাজ করার চেষ্টা করবে। আন্দোলনের আসল উদ্যেশ্য সফল হতে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিতে কাজ করছেন, তবে কিছুটা তো সময় লাগবেই। তিনি জেলা থেকে এসব আওয়ামীলীগের দোষর কর্তাদের বদলী করে জেলার দপ্তরগুলোতে নতুন কর্মকর্তা দেয়ার আহবান জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। জেলায় টিসিবি’র তালিকা সংশোধন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবশ্যই আওয়ামীলীগ পরিবারের সুবিধা দেয়ার জন্য তৈরী টিসিবি’র তালিকা সংশোধন জরুরী। তবে, এটা সারা দেশের বিষয়। সরকার অবশ্যই বিষয়টি বিবেচনায় নিবেন। তিনি আরও বলেন, সরকারী নির্দেশনা নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার টিসিবির তালিকা সংশোধন করে বঞ্চিতদের অন্তর্ভূক্তির ব্যবস্থা করা হোক।
সদর আসনের সাবেক এমপি ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক লতিফুর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, জেলায় আওয়ামীলীগ আমলের সকল অফিসার এখনো দায়িত্বে রয়েছে, এটা অবশ্যই দেখা দরকার। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিসয়টি অবশ্যই আমলে নিয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার সরকারের আমলে তাদের দোষর অফিসারদের দ্বারা বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের উপর অত্যাচার-জুলুম, মামলা-হামলা, হত্যাকান্ড চালিয়েছে। বিরোধীদলের কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্ন কাজে বাধা সৃষ্টি ও বঞ্চিত করেছে। তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি এসব লগি-বৈঠার আজ্ঞাবহ কর্মকর্তা জেলা থেকে সরানো যাবে, ততই জেলার জন্য মঙ্গল।
এবিষয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির আহবায়ক গোলাম জাকারিয়া বলেন, জেলায় স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের প্রেতাত্মা অফিসারগুলো বর্তমানেও দায়িত্ব পালন করছেন। এটা জেলার জন্য অবশ্যই ভালো কিছু নয়। তবে, বিষয়টি জেলা প্রশাসন অবশ্যই দিখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তিনি দ্রুত এসব কর্মকর্তাদের সরানোর কথাও বলেন।
জেলা বিএনপির সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জেলা সহ-সভাপতি ও গোমস্তাপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. নুরুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলন এবং আন্দোলনকারীদের রক্তে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার পতন হলেও এখনও বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে জেলায় বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা কর্মরত রয়েছেন। অতি দ্রুত এদের জেলা থেকে বদলী করা দরকার। অন্যথায় আন্দোলনের আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। তিনি জেলা থেকে এসব আওয়ামীলীগের দোষর কর্তাদের বদলী করে নতুন কর্মকর্তা দেয়ার অনুরোধ জানান। আওয়ামীলীগ পরিবারের সুবিধা দেয়ার জন্য তৈরী টিসিবি’র তালিকা সংশোধন করার দাবিও জানান বিএনপির এই নেতা।
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম বিপিএম-সেবা বলেন, জেলা পুলিশে পুলিশ সুপার ছাড়া অন্যান্য পদে তেমন একটা রদবদল হয়নি। থানার ওসিদের রদবদল করা হয়েছে। তাদেরও তদারকি করা হচ্ছে। কোন ব্যাতয় ঘটলে-সেটারও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। জেলা পুলিশে শতকরা ৪০ ভাগ রদবদল হয়েছে। কর্মকর্তাসহ পুলিশের বিভিন্ন পদে থাকা পুলিশ সদস্যদের রদবদলের কাজ চলমান। একসাথে সব থানা বা জেলা পুলিশের সকল অফিসারদের বদলী বা রদবদল করলে কিছুটা সমস্যা তো হতেই পারে। তাই সময় নিয়ে জেলা পুলিশে রদবদল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ধীরে ধীরে জেলা পুলিশে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে এবং সাধারণ মানুষ বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের আশংকা কেটে যাবে ইনশাল্লাহ।
জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সামাদ বলেন, বিগত সরকারের আমলে জেলায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাগণ এখনো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কিছু কর্মকর্তার বদলী হয়েছে। অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও বদলী করে নতুন কর্মকর্তা জেলায় আসবে। তবে সেটি সময় লাগবে। তিনি বলেন, সরকারী কর্মকর্তাগন সরকারের দেয়া দায়িত্ব পালন করছেন। যদি কোন কর্মকর্তা দায়িত্বে অবহেলা বা সরকারী নির্দেশনার বাইরে কাজ করেন, তাহলে অবশ্যই সরকার ওসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। তিনি আরও বলেন, সব কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে কিছুটা সময় লাগছে, তবে বিষয়গুলো সময়ের মধেই সমাধান হবে বলে আমার বিশ্বাস। সময় থাকতেই সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সতর্কতার সাথে পদক্ষেপ গ্রহণ করে আ’লীগের আজ্ঞাবহ কর্মকর্তাদের জেলা থেকে রদবদল করবেন, এমনটায় আশা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সচেতন মহলের।