অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের উপর বিদেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের হেনস্তা ও সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। এর মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী হাসিনার পতনের পর প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শোডাউন দিল সংগঠনটি। মিছিলে প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী অংশগ্রহন করেছিলেন। রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১ টায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় তারা ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও-আওয়ামীলীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও-ছাত্রলীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও-খুনি হাসিনার আস্তানা, জ্বালোরে জালো-আগুন জ্বালো, ভারত যদি বন্ধু হও-হাসিনাকে ফেরৎ দাও, আবু সাঈদ মুগ্ধ-শেষ হয়নি যুদ্ধ, আবু সাঈদের রক্ত-বৃথা যেতে দেব না, মুগ্ধের রক্ত-বৃথা যেতে দেব না, বাংলাদেশ বাংলাদেশ- জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, ছাত্রলীগের গুন্ডারা- হুশিয়ার সাবধান, আওয়ামী লীগের ঠিকানা-এই বাংলায় হবে না, ফাঁসি ফাঁসি চাই-খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই, আমার ভাই কবরে-খুনি কেন ভারতে সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদে স্লোগান দিতে থাকেন। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি ঘুরে কেন্দ্রীয় মসজিদ-মধুর ক্যান্টিন-লেকচার থিয়েটার থেকে শ্যাডো হয়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে ভিসি চত্বরে এসে পুনরায় টিএসসিতে শেষ হয়। এখানেই সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সংগঠনটি।
সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন অনুযায়ী যে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে সেই সরকার দীর্ঘ দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের জনগণ যে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি সেই ভোটাধিকার গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী দোসরেরা এখনো দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আজকে তারা বিদেশের মাটিতে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে সেই সরকারের আইন উপদেষ্টা, বাংলাদেশের বিবেক খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে হেনস্তা করে যাচ্ছে। আজকের সারাদেশে ফ্যাসিবাদের দোসরেরা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, গুপ্ত হামলা করছে। গণতন্ত্রকামী আমি মানুষের উপর বিভিন্ন চোরা-গুপ্ত হামলা করে আহত করছে। বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগদের যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল, একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাহাজানি, ছিনতাই, চুরি,ধর্ষণ,ডাকাতি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গেস্টরুম,গণরুমের মাধ্যমে নির্যাতন, নিপীড়ন চালিয়েছে। আজকে বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এই সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইতোমধ্যে ঘোষনা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আর কোন গেস্টরুম, গণরুম প্রক্রিয়া ফেরত আসবে না।
তিনি আরও বলেন, বিগত দেইড় দশের ধরে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি ছাত্রদলের প্রতিটি নেতা-কর্মীর রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ বিগত দেড় দশক ধরে আমাদের উপর হামলা মামলার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে এক দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছিল। বিগত দেশ দশকে যারা বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল এবং একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর যে অধিকার, একজন নাগরিকের যে অধিকার সেই অধিকার হরণ করেছিল তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ আজ এক হয়েছে। বাংলাদেশে, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটিতে আর কোন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম হবে না।