আনারস প্রাকৃতিক এক প্রাচীন রসালো গুচ্ছ ফল। এটি একটি বিদেশী ফল হলেও দেশ এবং বিদেশে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আনারসকে বলা হয় ফলের রানী। কাঁঠালের জন্য বিখ্যাত ভালুকায় বাণিজ্যিকভাবে আনারস চাষে নতুন সম্ভবনা দেখাচ্ছেন সামছুল হক সুরুজ মেম্বার। তার বাগানে লম্বা ধারালো সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আনারসগুলো। কোনোটার রঙ গাঢ় সবুজ, কোনোটা লাল খয়েরি রঙ ধারণ করেছে। সিলেট বা টাঙ্গাইলের মতোই রসালো মিষ্টি এই আনারস। আকার এবং স্বাদও এক। টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে চারা সংগ্রহ করে কাদিগর নয়াপাড়া গ্রামে ২০২৩ সালে ২৪ বিঘা জমিতে শুরু করেন আনারস চাষ। তার আগে ভালুকায় এতো বড় আনারস বাগান করেনি কেউ। তার বাগানে রয়েছে হানিকুইন বা জলডুগি ও থাইল্যান্ডি কেলেন্ডার জাতের আনারস।
এই উদ্যোক্তা জানান ২৪ বিঘা জমিতে আনারস চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। পরীক্ষামূলক আনারস চাষ করে এবছরের তুলনায় আগামী মৌসুমে কোটি টাকার আনারস বিক্রি করে লাভের আশা করছেন এই চাষি। ভালুকা উপজেলায় আনারস চাষে একটি বিপ্লব ঘটাতে চান তিনি। তার এই আনারস বাগান দেখে আনারস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এলাকার বেকার যুব সমাজ। তারা কৃষি অফিসের সহায়তা নিয়ে আনারস চাষ করে বেকারত্ব দূর করতে চান। সরেজমিনে আনারস বাগানে উদ্যোক্তা সামছুল হক সুরুজ আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, ২০২৩ সালে ২৪ বিঘা জমিতে পরিক্ষামূলক ভাবে আনারস চাষ শুরু করেছি। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ। এবছরের তুলনায় আগামী মৌসুমে কোটি টাকার আনারস বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি। কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ভালুকায় আনারস চাষে বিপ্লব ঘটাতে চাই। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, শুধু মধুপুরেই নয়, ভালুকার লাল মাটিতেও এসব জাতের আনারস চাষ করে সফল হওয়া সম্ভব।
এলাকার কয়েকজন যুবক জানান, তারা টাঙ্গাইল, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় আনারস চাষ করতে দেখেছেন। ভালুকা উপজেলায় এতো বড় বাগান তার দেখেনি তারা। সুরুজ মেম্বারের আনারস চাষ দেখে তারাও আনারস চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তারা এই বাগান থেকে চারা সংগ্রহ করে আনারস চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান জানান, ভালুকা উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। উপজেলার সুরুজ মেম্বারের বাগানটিই সবচেয়ে বড়। আমরা তার বাগান পরিদর্শন করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।