চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য পাষন্ড রফিকুল ইসলাম (৫৫) বলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ধষীতার পিতা। ধর্ষনকারী লম্পট শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের পিরগাছি (গুপ্ত মানিক) গ্রামের মৃতঃ হাজ¦ী মোজাম্মেল হক ভুলুর ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য রফিকুল ইসলাম (৫৫)।
গত রবিবার (১০ নভেম্বর) সকাল অনুমান সাড়ে ১০ টার দিকে এঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাবা মোঃ বাবু @ মঙ্গলু সোমবার (১১ নভেম্বর) শিবগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে, ধর্ষীতার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকী দেয়া এবং ডাক্তার-পুলিশের কাছে তদবির অব্যাহত রেখেছেন ধর্ষনকারী লম্পট বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য রফিকুল ইসলামের ছেলে বাংলাদেশ সেনা বাহীনিতে কর্মরত সেনা সদস্য রবিউল ইসলাম সানি। জঘণ্য কাজের সাথে জড়িত বাবা কে বাঁচাতে সেনা সদস্য রবিউল ইসলাম সানির অত্যাচারে অতিষ্ট চিকিৎসক ও পুলিশ। অন্যদিকে, লম্পট রফিকের এটা নতুন একটা ঘটনা নয়? এর আগে তাঁর আপন ছেলের বউ, নিজ বোনের মেয়ে ভাগ্নিও রক্ষা পায়নি লম্পট রফিকের হাত থেকে। তার ভাগ্নি নিজে লম্পট মামা রফিক কে পায়ের জুতা মেরে সায়েস্তা করেছে। লম্পট স্বভাবের জন্য তার ছেলে রফিককে ঘরে ঢুকিয়ে মারপিট করেছে। তার নজর খুব খারাপ, স্কুলে যাওয়ার সময় সে স্কুল ছাত্রীদেরও বিভিন্ন অশ্লীল কথা বলে উত্যক্ত করে বলেও এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্র জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের পিরগাছী গ্রামের এক তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া শিশুটির (১২) বাবা একজন দিন মজুর, মা গৃহিনী। কোন রকম করে সংসার চালান। গত রবিবার (১০ নভেম্বর) সকাল অনুমান সাড়ে ৯ টার দিকে শিশুটির মা কারিমা সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুরে একটি এনজিওতে ঋণ নিতে যান। এ সুযোগে ভিক্টিমের বাড়ীর সামনে বাঁশের মাচার উপর বসে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ভিডিও ছবি দেখিয়ে শিশুটির হাতে ২০টাকা দিয়ে বলে চল তোদের বাড়ীতে।
বাড়ীর ভিতরে নিয়ে দেখে ২টি ঘরের মধ্যে একটি ঘরে তালা বদ্ধ, পাশের ঘরটি দরজা বিহিন থাকায় কাঠের খাটিয়ার উপরে থাকা গরুর খাবার ধানের খড়ের উপরে শুইয়ে দিলে শিশুটি ভয়ে ছটপট করতে শুরু করে। এসময় ‘ধর্ষক বলে আমি পুলিশ ছিলাম, আমার ব্যাটাও আর্মি, আমি যা কহছি-তা যদি না শুনিস, তাহলে তোকে মেরে ফেলবো’ বলে শিশুটিকে উলঙ্গ করে সেখানে শিশুটিকে বিভিন্ন প্রকার ভয় দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে ধর্ষন করে পালিয়ে যায় ধর্ষনকারী লম্পট শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের পিরগাছি (গুপ্ত মানিক) গ্রামের মৃতঃ হাজ¦ী মোজাম্মেল হক ভুলুর ছেলে অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য রফিকুল ইসলাম (৫৫)।
ধর্ষনের শিকার শিশুটির চিৎকারে ছুটে আসে প্রতিবেশিরা। ভিক্টিম শিশুর বাড়ী একই উপজেলার পিরগাছী গ্রামে। ধর্ষনে শিকার শিশুর মা বাড়ী এসে দেখে তার মেয়ে চিৎকার করে কান্নকাটি করছে। মেয়ের কান্না শুনে মা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে মা তোর। এ কথা শুনে ভিক্টিম শিশুটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। প্রতিবেশীরা বলে তোমার মেয়েকে ব্যাঙ্গা রফিক খারাপ কাম করেছে। একথা শুনে মাও জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। প্রতিবেশিরা মা-মেয়ে কে মাথায় পানি দিলে মা-মেয়ের জ্ঞান ফিরে। ভিক্টিমের বাবা মোঃ বাবু@ মঙ্গলু খবর পেয়ে বাড়ী এসে প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় ভিক্টিম মেয়ে কে নিয়ে শিবগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে ধর্ষক রফিকুল কে একমাত্র আসামী করে একটি লিখিত এজাহার দায়ের করে তার পিতা বাবু। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের পিরগাছী গ্রামের এক তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া শিশু ধর্ষণের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া। তিনি জানান, শিবগঞ্জ থানায় ৯ এর (১) ধারায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ (সংশোধিত ২০২০)সালের আইনে মামলা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যাহার মামলা নংÑ১৮, তারিখঃ-১১/১১/২০২৪ইং।
মামলার এজাহার ও ধর্ষনে শিকার শিশুর পরিবার এবং এলাকাবাসীরা জানান, গত ১০ নভেম্বর (রবিবার) ওই শিশুকে বাড়ীতে রেখে তার মা মহিপুর গিয়েছিলো ঋনের টাকা নিতে। এ সুযোগে মোবাইলে বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে এবং ২০টাকা হাতে দিয়ে দুশ্চরিত্র রফিকুল অরফে ব্যাঙ্গা রফিক বাড়ী ফাঁকা পেয়ে অসহায় পরিবারের স্কুল পড়ুয়া শিশুটি কে ধর্ষন করেছে। আমরা ব্যাঙ্গা রফিকের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এটা তার নতুন একটা ঘটনা নয়? এর আগে তাঁর আপন ছেলের বউ, নিজ বোনের মেয়ে ভাগ্নিও রক্ষা পায়নি লম্পট রফিকের হাত থেকে। তার ভাগ্নি নিজে লম্পট মামা রফিক কে পায়ের জুতা মেরে সায়েস্তা করেছে।
ধর্ষনের শিকার শিশুর পরিবার ও এলাকাবাসী অভিযোগের শুরে আরো বলেন, রফিকের ছেলে আর্মি’র চাকরী করে, সেখান থেকে ছুটি নিয়ে এসে ধর্ষক বাবাকে পুলিশের হাত থেকে গ্রেফতার এড়ানো, মামলা ডিসমিস, ভিক্টিমের ডাক্তারি পরিক্ষা (ডি.এন.এ রিপোর্ট) নরমাল করার জন্য গত ১১ নভেম্বর সোমবার ভিক্টিমের ডাক্তারি পরিক্ষার সময় পুলিশ এবং হাসপাতালের ডাক্তার কে বারবার ফোন ধরাচ্ছে বাংলাদেশ সেনা বাহীনিতে কর্মরত সেনা সদস্য ধর্ষক রফিকের ছেলে রবিউল ইসলাম সানি। ভিক্টিমের পরিবার কে বলেছে ‘আমার বাবার কিছু করতে পারবি না তোরা, রিপোর্টে ডাক্তার কিছু পায়নি’। এমন কি বিভিন্ন কর্মকর্তা কে দিয়ে ধর্ষক বাবার নামে হওয়া মামলা ডিসমিস করার জন্য থানা পুলিশ কে বিরক্ত করছে বলেও জানান পরিবার ও এলাকাবাসী। আমরা এলাকাবাসী ব্যাঙ্গা রফিকের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
কান্না জড়িত শুরে ধর্ষনের শিকার শিশু বলেন, রবিবারের দিন আমার আম্মা গরুকে খাবার দিতে গেছে তখন আমার আম্মা কে রফিক ব্যাঙ্গা বলছে তুমি কোথায় যাবে? তখন আমার আম্মা বলছে মহিপুর যাবো একটা কাজে। আমার আম্মা চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে পানি খাওয়ার জন্য বাড়ীর ভিতরে আসে। তার পরে রফিক জোর করে আমাকে কোলে তুলে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে ভয় দেখিয়ে আমার পোষাক খুলে আমার মুখ চেপে ধরে খারাপ কাজ করেছে। আমি কাঁদছি আমাকে লাগছে তাও ছাড়ে না। আমাকে কথা বলতে দেয়না, তারপরে আমাকে ২০ টা টাকা দিয়ে চলে গেছে। কাউকে কিছু বললে গলা চিপে মেরে ফেলে দিবো বলে ভিক্টিম শিশুকে হুমকি দেয় ধর্ষক রফিক বলেও জানায় শিশুটি। এব্যাপারে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গ্রেফতার এড়াতে পলাতক থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পিরগাছী গ্রামে এক তৃতীয় শ্রেণী পড়ুয়া শিশু ধর্ষনের শিকার বিষয়ে ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল লতিফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাকে ভিক্টিমের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ বলেনি! এলাকার মানুষের মুখে শুনেছি। যেহেতু আমরা কেউ চোখে দেখিনি, ভিক্টিমের সাথে যদি রফিক এমন কাজ করে থাকে, তাহলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার সাব-ইন্সেপেক্টর (নিরস্ত্র) মোঃ হাসান আলী বলেন, মামলার তদন্ত ভার পাওয়া মাত্র আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা, বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ভিক্টিমের ডাক্তারি পরিক্ষা করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। ধর্ষক আসামী রফিকের ছেলে সেনা সদস্য রবিউল ইসলাম সানি ডাক্তারি পরিক্ষার সময় আপনার সাথে হাসপাতালে কেন গিয়েছিল? বাবা আসামী কে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য? নাকি ভিক্টিমের ডাক্তারি পরিক্ষার রিপোর্ট নরমাল করার জন্য? যদি কোনটা না হয় তাহলে ভিক্টিমের ডাক্তরি পরিক্ষা (ডি.এন.এ)’র রিপোর্ট নরমাল কি ভাবে জানলো? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসামীর ছেলে সেনা সদস্য ফোনে আমাকে বিরক্ত করছে এটা সত্য। আসামীর গ্রেফতার এড়ানোর কোন সুযোগ নাই। আসামী গ্রেফতারের চেষ্টায় আছি। বাংলাদেশের মধ্য যেখানে সন্ধান পাওয়া যাবে, সেখান থেকে গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। ডাক্তরি পরিক্ষার রিপোর্টের বিষয়টি আমার মাধ্যমে জানার কোন সুযোগ নাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জেনেছে।