বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দুই ভাই বসুন্ধরা গ্রুপের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। মঙ্গলবার ই-মেইল ও ডাকযোগে আবু সাঈদের দুই ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সমস্যার’ কথা উল্লেখ করেন তারা। এ বিষয়ে আবু হোসেন মিডিয়াকর্মীদের বলেন, গত মাসে নিয়োগপত্র পাওয়ার পর থেকে অফিসে সময় দিতে পারিনি। সংসার নিয়ে সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয়। অফিসে সময় না দিয়ে মাস শেষে বেতন নেওয়া দৃষ্টিকটু লাগে। যার কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। এর আগে ৯ অক্টোবর আবু সাঈদের ভাই রমজান আলীকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের রংপুর ব্যুরো অফিসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী এবং আরেক ভাই আবু হোসেনকে টিভি চ্যানেল নিউজ-২৪ এর রংপুর ব্যুরো অফিসের জ্যেষ্ঠ নির্বাহীর পদে নিয়োগ দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ। এদিন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পক্ষে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মো. ইয়াসিন হোসেন পাভেল পীরগঞ্জের বাবনপুরে আবু সাঈদের গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে আবু সাঈদের দুই ভাই আবু হোসেন ও রমজান আলীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন তিনি। এছাড়া সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুনকে চাকরি দিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ৯ অক্টোবর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শওকাত আলী সেমিনার অ্যাটেনডেন্ট পদে সুমির হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাঈদ। আবু সাঈদের মৃত্যুর পর তার মা মনোয়ারা বেগম আহাজারি করে বলেন, ‘তুই মোর ছাওয়াক চাকরি না দিবু না দে কিন্তু মারলু ক্যানে।’ মনোয়ারা বেগমের এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এদিকে আবু সাঈদের মৃত্যুর পর সারাদেশে আন্দোলন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এর ধারাবাহিকতায় গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় তার বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে মহানগরের তাজহাট থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।