দেশের বৃহত্তম চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগরের ‘রশিদ এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড’র মালিক আব্দুর রশিদ ওরফে চাল রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকার একটি গলি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আওয়ামীলীগের সময় খাদ্যমন্ত্রী সাধন কুমার মজুমদারের সাথে দহরম ছিল চাল রশিদের। তিনি মন্ত্রীকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন। ব্যবসার নামে অর্থ নিয়ে মালামাল সরবরাহ না করা, চেক জালিয়াতি ও প্রতারনার ঘটনায় একাধিক মামলায় বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কুষ্টিয়ার শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী আবদুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ সুত্র জানায়, আব্দুর রশিদের নামে সারা দেশে ১১০টির বেশি মামলা আছে। বিভিন্ন মামলায় তার নামে শতাধিক ওয়ারেন্ট জারি আছে। তিনি বেশ কয়েকটি মামলায় জামিনে ছিলেন। তারপরও তার নামে এখনো ওয়ারেন্ট জারি আছে। রাজশাহীর ইনাম ফিড মিলের মালিক আতিকুর রহমানের দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ওসি শিহাবুর রহমান শিহাব। আব্দুর রশিদ ওরফে চাল রশিদ দেশের অন্যতম শীর্ষ চাল ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি। তিনি দেশের চাল সিন্ডিকেটের মূলহোতা। তার ইশারায় দেশে চালের দাম উঠানামা করত। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে আদালতে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ টাকা আত্মসাতের মামলা করেন রাজশাহীর আতিকুর। মামলায় আতিকুর রহমান উল্লেখ করেন, আব্দুর রশিদ তার ব্যাংক হিসাবে আমার কাছ থেকে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ টাকা অগ্রিম নিয়ে মৎস্য খাদ্যের কাঁচামাল কিংবা টাকা কোনোটাই দিচ্ছেন না। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে সিআর ৬৪৩/২৩ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন তিনি। আব্দুর রশিদ এবং তার পরিবারের সদস্যদর বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির দায়ে আদালতে ৬৮টি মামলা করেছে সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকসহ দেশের বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এরপর থেকেই তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে ছিলেন। মামলার বাদি আতিকুর রহমানের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন না ধরায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। কুষ্টিয়া মডেল থানা সূত্র জানায়, রাজশাহীর পুঠিয়া এলাকার ইনাম ফিড মিলের মালিক আতিকুর রহমানের সাথে চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। পাবনার ঈশ্বরদীতে রশিদ ওয়েল মিলস্ লিঃ নামে আবদুর রশিদের একটি তেলের কারখানা রয়েছে। রশিদের মিল থেকে ফিড মিলের কাঁচামাল কেনার জন্য আব্দুর রশিদকে চেকের মাধ্যমে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৬৪ হাজার ৮৬৭ টাকা অগ্রিম প্রদান করেন আতিকুর। টাকা নেওয়ার পর দেড় বছর ধরে আটকিয়ে রেখে মালামাল ও টাকা কোনটায় দিচ্ছিলেন না রশিদ।