বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে সভা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শনিবার সকাল ১০টায় জেলা শহরের শহীদ সাটু হল অডিটোরিয়ামে এই স্মরণ সভা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সামাদ। অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম বিপিএম সেবা, সিভিল সার্জন এস এম মাহমুদুর রশিদ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আফাজ উদ্দিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও,
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ছাত্র আন্দোলনের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক মোঃ আব্দুর রাহিম, নিহত তারেক হোসেনের পিতা আসাদুল ইসলাম ও মতিউর রহমানের স্ত্রী রোজিনা খাতুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশিনার আমিনুল ইসলাম। শেষে জেলা পরিষদের অর্থায়নে শহীদ ও আহত পরিবারের মাঝে সহায়তার চেক বিতরণ করেন অতিথিরা। সভায় জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতা যে উদ্যেশ্যে, যে লক্ষ্য নিয়ে আন্দোলন করেছেন,
অভ্যুত্থান ঘটিয়েছেন বিপ্লব ঘটিয়েছেন, এগুলো তখনই সাফল্যমণ্ডিত হবে যখন আমরা আমাদের নিজনিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবো। শিক্ষার্থীরা যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্ষুধা এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, প্রশাসনিক পদে কর্মরতদের দায়িত্ব হবে, দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ উপহার দেয়া। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, আমরা যেন বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়তে পারি। বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র ভাইয়েরা আগেও যেমন ছিলেন, আগামীতেও আমাদের সাথে একসঙ্গে থেকে একতাবদ্ধ হয়ে আমাদের সহযোগিতা করবেন। আমাদেরকে একতাবদ্ধ থেকে সকল অপশক্তির অপকৌশল প্রতিহত করতে হবে। আমাদের মধ্যে যেন কোনো বিভেদ না থাকে, সকল শ্রেণী পেশার জনগণ সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।
তাহলেই আন্দোলনের উদ্যেশ্য সফল হবে। সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ নকীব হাসান তরফদার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ তরিকুল ইসলামসহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছমিনা খাতুন, জেলা প্রশাসনের নির্বার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ, জেলার বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের প্রধান এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ গ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত নিহত পরিবারের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
শেষে অনুষ্ঠানে আহত ও নিহতদের স্মরণে বিশেষ দোয়া করা হয়। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জেলা শহরের শহিদ সাটু অডিটরিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত এই সভায় জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ঢাকায় নিহত চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা এলাকার তারেক হোসেনের পিতা আসাদুল ইসলাম ও শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুরের মতিউর রহমানের স্ত্রী রোজিনা খাতুনকে ১ লক্ষ করে ২ লক্ষ টাকা এবং বিভিন্নস্থানে আহত ১১জনকে ২০ হাজার করে টাকা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।