দি চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে জেলার ব্যবসায়ীদের সাথে বার্ষিক সাধারণ সভার মাধ্যমে মিলন মেলা শেষে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন বার বার নির্বাচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ। শনিবার দুপুরে জেলা শহরের পুরাতন বাজারস্থ চেম্বার ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা হয়। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ খাইরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মোঃ রিমন আলী, পরিচালক মোঃ আব্দুল আওয়াল, মোঃ নূর আমিন, মোঃ আরিফ উদ্দীন ইতি, আমদানি ও রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি ও চেম্বারের পরিচালক আলহাজ¦ মোঃ একরাম আলী। এসময় জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়কালে চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, গত ২৩ নভেম্বর/২৪ তারিখ সাধারণ সদস্যবৃন্দের ভোটে আমার নেতৃত্বে প্যানেল এর ১৮ জন পরিচালকের মধ্যে ১৭ জন জয়যুক্ত হয়েছে ন ও ২৬/১২/২০২৪ তারিখ পরিচালনা পরিষদের ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় ১১তম সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। শনিবার জেলার ব্যবসায়ীদের বার্ষিক সাধারণ সভার মাধ্যমে মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অত্যান্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আমরা ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। একদিকে, ব্যাংক ইন্টারেষ্ট ১৫% হারে যা চক্রবিধি হারে ২০% করে ব্যবসায়ীদের প্রদান করতে হচ্ছে। অপরদিকে, ডলার ও অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার অস্থিতিশীল থাকায় ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। আপনাদের সদয় অবগতির জন্য আরও জানাচ্ছি, সোনামসজিদ স্থলবন্দর হতে বছরে প্রায় ১ হাজার দুইশত কোটি টাকা সরকার রাজস্ব আদায় করলেও সোনামসজিদ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাইওয়ে সড়কটি ৪ লেনে উন্নত করার দাবী থাকলেও শুধুমাত্র বর্তমান রাস্তার দুই পার্শ্বে ২মিটার করে মোট ০৪ মিটার বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে আমাদের দাবী উপেক্ষিত হয়েছে। এ বৃদ্ধির ফলে যানবাহন চলাচলে কোন উপকার আসবে না এবং দূর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না। এছাড়া সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ১৯৯২ সালের পরে কাস্টমস অবকাঠামো এর নির্মাণ কাজ হয়নি বললেই চলে। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি সাসেক প্রকল্পের মাধ্যমে যে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নের কোন অগ্রগতি নেই। আমরা সোনামসজিদ স্থলবন্দরের সাসেক প্রকল্পটি জরুরী ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জোর দাবী জানাচ্ছি। এছাড়া স্থলবন্দর এরিয়ার মধ্যে একটি অগ্নিনির্বাপক কেন্দ্র ‘ও ২০ বেড সম্বলিত হাসপাতাল নির্মাণের ও জোর দাবী জানাচ্ছি। এছাড়া, জেলার অন্যতম রহপুর রেলবন্দর টি পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দর প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন থেকে দাবী জানিয়ে আসছি। রেলপথে পণ্য আমদানী ও রপ্তানীর ক্ষেত্রে প্রায় ৩০% থেকে ৪০% মালামাল বহনের খরচ (ক্যারিং) কম পড়ে।
এছাড়া রহনপুর রেলবন্দর পূর্ণাঙ্গ ভাবে চালু হলে নেপাল, ভুটান সহ ভারত থেকে পন্য আনা নেয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে এবং বর্তমান বাৎসরিক রাজস্ব আয় ২০০ কোটি টাকা থেকে ২০০০ কোটি রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সরকারের বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি রপ্তানী প্রক্রিয়া অঞ্চল করার জন্য যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তার মধ্যে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আমনুরা রেলওয়ে জংশন সংলগ্ন এলাকায় কৃষি রপ্তানী প্রক্রিয়া অঞ্চল করার দাবী জানিয়ে আসছি। আমনুরা রেল জংশন এলাকাটি এমনস্থানে অবস্থিত যেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া জেলার মূল রেলপথের মাধ্যমে ভারত, নেপাল ও ভুটান হতে কাঁচা মাল আমদানী ও উৎপাদিত পণ্য রপ্তানীতে পরিবহন খরচ কম হওয়ায় বিশ্ববাজারে আমরা অন্যান্য দেশের সাথে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রতিদ্বন্দিতায় টিকে থাকবো বলে আমার বিশ্বাস। রেলের মাধ্যমে আমনুরা থেকে মংলা নৌবন্দর ব্যবহার করে সারা পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া এ অঞ্চলের শিক্ষিত/ অর্ধশিক্ষিত ৩০ থেকে ৫০ হাজার যুবকের কাজের কর্মসংস্থান হবে। আমরা রেল মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট চাঁপাইনবাবগঞ্জ হতে ঢাকা মুখী আন্তনগর ০১টি ট্রেন রাতের বেলা চালুর দাবী জানাচ্ছি। লেখনির মাধ্যমে জেলার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মিডিয়াকর্মীদের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার অনুরোধ জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।