সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় জোড়া খুনের মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজনকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আটজনকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ছাড়াও অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় হয়।রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ আদেশ দেন। এই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাড. হামিদুল ইসলাম দুলাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আরও ৩৯ আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছে আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই উপজেলার চকপাঙ্গাসী গ্রামের দেল মাহমুদের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন রিন্টু, আক্তার হোসেনের ছেলে হাসানুর রহমান হাসু, আফাজ আলীর ছেলে কাওসার আলী ও নাজেম উদ্দিন জাহিদুল ইসলাম জালিম। অপরদিকে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই গ্রামের বাদশা প্রামাণিকের ছেলে মোতালেব ও আশরাফ আলী, আবুল প্রামাণিকের ছেলে রেজাউল, ওসমানের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও মনিরুল ইসলাম, আজু প্রামাণিকের ছেলে বেল্লাল হোসেন, ইয়াসিন আলীর ছেলে দুলাল হোসেন ও আয়নাল হকের ছেলে আব্দুল আওয়াল। মামলা সূত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার চকপাঙ্গাসী গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী আবুল কালামের বিরোধ চলে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি সকাল ৮ টার দিকে সাইফুল ইসলাম, তার ভাই সোনা মিয়া, আবুল কালাম, মকবুল হোসেনসহ অন্যরা বাড়িতে বসে ছিলেন। এ সময় আসামি হাসানুর রহমান হাসুর নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এতে মকবুল হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও সোনা মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। একই সঙ্গে তাদের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর মকবুল হোসেন, সোনা মিয়া ও সাইফুল ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে তাদের প্রথমে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মকবুল হোসেন (৪০) ও সাইফুল ইসলামের (৪৫) মৃত্যু হয়। পরে এ ঘটনায় ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি উল্লাপাড়া মডেল থানায় চকপাঙ্গাসী গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলা চলাকালে ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। এ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে এ মামলায় রায় ঘোষণা করেন আদালত।