চাঁপাইনবাবগঞ্জস্থ ৫৯ বিজিবির প্রতিরোধে অবশেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্ত এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ কাজ বন্ধ করেছে বিএসএফ। হেড কোয়ার্টারের চিঠি বা অনুমতি ছাড়া সীমান্তে বিএসএফ বা বিজিবি কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ কিংবা কাঁটা তারের বেড়া করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত সোমবার (৬ জানুয়ারি) থেকে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে উত্তেজনা ও স্থানীয় এলাকাবাসীর আতংকের পর বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে বিজিবি-বিএসএফ অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ৫৯ বিজিবি মহানন্দা ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. গোলাম কিবরিয়া।
স্থানীয় ও বিজিবি সুত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৭৭/১-এস ও ২-এস এলাকায় ছয় মাস আগে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ড থেকে প্রায় ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারত একটি কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করে। আর সেই রাস্তার পাশে গত সোমবার কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ করার লক্ষ্যে বিএসএফ প্রথমে গর্ত করে ও পরে বেড়া নির্মাণের সময় বাধা দেয় বিজিবি। এতেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে সেদিন সকাল থেকেই সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়। পরে মঙ্গলবার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল ইমরান খাঁনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন আসেন এবং অবস্থান করেন।
এদিকে, সীমান্তে দেশের ভূমি রক্ষায় স্থানীয়রাও ক্ষুদ্ধ হয়ে বিএসএফের অবৈধ কর্মকান্ডকে প্রতিহত করতে বিজিবির সাথে দিনব্যাপী সীমান্তে অবস্থান নেয়। একইভাবে ভারতীয় নাগরিকদেরও বিএসএফের সাথে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ৫৯ বিবিজি অধিনায়ক গোলাম কিবরিয়া জানান, সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে ভারতের মালদা জেলার কালিয়াচক থানার সবদলপুর বিএসএফ কাম্পের সদস্যরা জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা সীমান্তে ১৭৭-এর ২ এস এলাকা ঘেঁষে কাঁটা তারের বেড়া দেয়ার জন্য মাটি খনন করছিল। এ সময় বিজিবির পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়। এ নিয়ে ওই দিন বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে পতাকা বৈঠক হলেও কোন সমাধান হয়নি। পরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) আবারও বিএসএফের পক্ষ থেকে ওই অবৈধ রাস্তার পাশে কাঁটা তারের বেড়া নিমার্ণের কাজ শুরু করলে বিজিবি আবারো বাধা দেয়। ফলে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে দুই দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আতঙ্কে ছিল সীমান্ত এলাকার জনগণ। পরে বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে বিজিবি-বিএসএফের অধিনায়ক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে দুই পক্ষ আলোচনার মধ্যেমে বিএসএফ বা বিজিবির হেড কোয়ার্টারের চিঠি বা অনুমতি ছাড়া সীমান্তে কোনো ধরনের বেড়া কিংবা স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্তে একমত হয়। ফলে বিএসএফ স্থানীয় সাধারণ জনগণকে নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ায় পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে এবং উভয় বাহিনী সর্তক অবস্থানে রয়েছে। এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলে কোন ভয়ের কোনও কারণ নেই বলেও জানান অধিনায়ক।