সংস্কার এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি সমান্তরালভাবে চালিয়ে নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক। নির্বাচন করতে এত সংস্কারের দরকার নাই। শুক্রবার সকালে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানাবো, আর বিলম্বিত নয়, আর দেরি নয়, আবু সাঈদ, মুগ্ধের রক্তের বিনিময়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সন্মান অক্ষুন্ন রাখতে হলে অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ আপনাকে ঘোষণা করতে হবে। সংস্কার চলবে, নির্বাচনের দিন-তারিখও চলবে, নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলবে। আমি নির্বাচনে অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। সংস্কার প্রসঙ্গে জয়নুল আবদিন বলেন, ১৯৯১ সালে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ সাহেব, যিনি এই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন, যিনি রশি টানিয়ে বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করার ব্যবস্থা করার কারণে বেগম খালেদা জিয়া জনগণের ম্যান্ডেটে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। আপনার কাছেও এরকম একটি নির্বাচনের প্রত্যাশা নিয়ে আমরা প্রতিদিন এই প্রেসক্লাবের সামনে বলতে চাই, একানব্বই সালের মতো একটি নির্বাচন করতে এত সংস্কারের দরকার নাই। যে সংস্কার দিয়ে জনগণ ৪০ টাকায় চাল কিনতে পারবে সেই সংস্কার দরকার। দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে এই নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ওপর নতুন করে ভ্যাট আরোপের সমালোচনা করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আপনারা ক্ষমতায় এসেছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আপনারা সরকারে। তাহলে কেন আপনারা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের টিফিন বক্সের ওপরে ভ্যাট ধার্য করবেন? কেন আপনারা অনৈতিকভাবে সকল নিত্য পণ্যের ওপরে ভ্যাট বসিয়ে দেবেন? ভ্যাট বৃদ্ধিতে জনগণ দিশেহারা। যেখানে ১০ হাজার টাকায় তাদের মাস যেত, এখন ২৫ হাজার টাকায়ও দিন অতিবাহিত করা যায় না। বিভিন্ন খাতে এখনো সিন্ডিকেট রয়ে গেছে বলেও অিভিযোগ করেন জয়নুল আবদিন। তিনি বলেন, হাসিনার আমলে সিন্ডিকেট করেছে, আপনার আমলেও সিন্ডিকেট করবে। একটা উদাহরণ দিচ্ছি, ওমরাহ পালনে যাবেন রোজার মাসে, আমি গতকাল একটি অনুষ্ঠানে শুনতে পেয়েছি, জেদ্দায় যেতে ৪০ হাজার টাকার টিকেট এখন ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একশ-দুইশ টিকেট কিনে অফিসে রেখে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করছে। উপদেষ্টারা কী করেন, গোয়েন্দারা কী করেন? তাদের খবর রাখতে হবে। এই সিন্ডিকেট তো হাসিনার নাই, হাসিনা তো হিন্দুস্থানে। তাই এই সিন্ডিকেটকে ধরে গরীব মানুষরা যাতে ৪০ হাজার টাকায় টিকেট কিনতে পারেন তার ব্যবস্থার আমি দাবি জানাচ্ছি। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের সব আন্দোলনের সঙ্গে তারেক রহমানের নির্দেশে যেসব আন্দোলন হয়েছে, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা, চিকিৎসক মিলনের কথা, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অসত্য মামলার বিষয়গুলোও আনার দাবি জানান তিনি। জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, সাবেক ছাত্রনেতা সুরঞ্জন ঘোষসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এসময় বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।