চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামবাংলার এক সময়ের অতি জনপ্রিয় খেলা হা-ডু-ডু বা কাবাডি। কালের বিবর্তনে এ খেলাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় এখন তার ঐতিহ্য হারিয়ে বিলুপ্ত হতে চলেছে! বিশেষ করে ভারত উপমহাদেশের এটি একটি প্রাচীন খেলা। এই উপমহাদেশে অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন নামে এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। যেহেতু আঞ্চলিক খেলা; তাই কোনো বিধিবদ্ধ নিয়মকানুন ছিল না। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে হা-ডু-ডু খেলার পোশাকি নাম কাবাডি। দুই দশক আগেও জেলার গ্রামাঞ্চলে হা-ডু-ডু খেলায় ছিল বিনোদনের অন্যতম উৎস। যা এখন বিলুপ্তির হতে চলেছে। কারণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলা এখন ক্রিকেট। এর পরের স্থান দখল করে আছে ফুটবল খেলা। উন্মুক্ত মাঠে, ইনডোরে, স্কুল-কলেজে, বাড়ির আঙিনায় এমনকি বাড়ির পাশে এক চিলতে জমিতেও কাবাডি খেলা যেতে পারে। বয়োবৃদ্ধ একজন কাবাডি খেলা প্রেমিক জানান, কাবাডি খেলার মাঠ বালকদের স্বীকৃত মাপ হলো লম্বায় ১২.৫০ মিটার, চওড়ায় ১০ মিটার হয়।
এবং মেয়েদের জন্য লম্বায় ১১ মিটার ও চওড়ায় ৮ মি.। প্রতি দলে ৭জন করে দুটি দলের ১৪ জন খেলোয়াড় অংশ নেয়। খেলার সময় প্রতি অর্ধে ২০ মিনিট করে ৪০ মিনিট। অথবা ৫ মিনিট বিরতিসহ দুই অর্ধে পুরুষদের ২৫ মিনিট করে এবং মেয়েদের ২০ মিনিট করে খেলার নিয়ম ছিল। এদিকে, যদি কোন খেলোয়াড় মাঠের বাইরে চলে যায়, তাহলে সে আউট হয়। একজন রেফারি খেলা পরিচালনা করেন। তাকে সহায়তা করেন দু’জন আম্পায়ার। একজন থাকেন যিনি পয়েন্ট গণনা করেন। এভাবেই খেলার হারজিত হয়। তবে হা-ডু-ডু এর কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই এবং বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নিয়মে খেলা হয় বলে তিনি জানান। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, আধুনিকতার ছোঁয়ার পাশাপাশি যুব সমাজের অতিরিক্ত মোবাইল আসক্তি এবং জনপ্রিয় ক্রিকেট খেলার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রাম-বাংলার অতি জনপ্রিয় হা-ডু-ডু খেলাটি বিলুপ্ত হতে চলেছে।