1. tohidulstar@gmail.com : sobuj ali : sobuj ali
  2. ronju@chapaidarpon.com : Md Ronju : Md Ronju
স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুন্ন করা যাবে না-উপদেষ্টা মাহফুজ - দৈনিক চাঁপাই দর্পণ
মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়া যাবে না-ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঢাকা ছাড়া ৬৩ জেলায় হবে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ নাটোরের সিংড়ায় ফেসবুকে মহানবীকে কটুক্তি করায় ছাত্রলীগ নেতা আটক গোমস্তাপুরে খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় বিএনপির বিশেষ দোয়া ও ইফতার মাহফিল শিবগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৮ জন আহত এপ্রিলে আসছে নতুন আরেকটি রাজনৈতিক দল শিবগঞ্জে খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনায় ইফতার-দোয়া মাহফিল রহনপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিল র‌্যাবের অভিযানে ইয়াবাসহ আটক-২ নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ ও বিচারের দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সনাকের মানববন্ধন

স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুন্ন করা যাবে না-উপদেষ্টা মাহফুজ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫
  • ৩১ বার পঠিত

স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুন্ন করা যাবে না-উপদেষ্টা মাহফুজ

সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী ট্যাগ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুন্ন করা যাবে না। অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে শাহবাগ ও শাপলা-এই দুই ভাগে জনগণকে বিভক্ত না করে সবাইকে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং সহনাগরিকদের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ সংলাপ ও সংহতির দিকে এগোনোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে মাহফুজ আলম এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। তথ্য উপদেষ্টা বলেন, জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল। কিন্তু, নাহিদ ইসলাম যেভাবে বলেছেন এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তারা কাফফারা দিয়েছেন। আমিও বলেছি, জামায়াতের যারা বাংলাদেশপন্থী, তারা এদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখেন। জামায়াতের নতুন প্রজন্মের অল্প কিছু ব্যতিক্রম বাদে কেউই পাকিস্তানপন্থী নন। ফলে, স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা যাবেনা। রাজনৈতিক ও আদর্শিক লড়াই করেই তাদের বিরুদ্ধে জিততে হবে। তাদের প্রোপাগান্ডা ওয়ারের জবাব দিতে হবে সত্য দিয়ে।
শাহবাগে যারা গিয়েছিল একটা বড় অংশ ‘চেতনা’র অন্ধতায় পড়ে গিয়েছিল। অনেক ছাত্র-তরুণ ইসলামবিদ্বেষ থেকে না, বরং নিছক যুদ্ধাপরাধী বিচারের দাবিতে গিয়ে উপস্থিত ছিল। তরুণ প্রজন্মের আবেগকে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থীদের মুজিববাদী অংশ কাজে লাগিয়ে এদেশে মবোক্রেসি কায়েম করেছিল। যার ফসল ছিক দীর্ঘ এক দশকের ফ্যাসিবাদী দু:শাসন-বিরোধীদলীয় কর্মীদের গুম, খুন, ধর্ষণ ও নিপীড়ন। তিনি আরও বলেন, কিন্তু, শাহবাগে অংশ নেয়া অনেক ছাত্র- তরুণই তাদের ভুল বুঝতে পেরে মুজিববাদী বয়ানের বাইরে যেতে চেয়েছেন। গত কয়েক বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা অংশীজন ছিলেন। আহতও নিহত হয়েছেন। তারা আমাদের সহযোদ্ধা। তারা আমাদের কমরেডস বটেন! এ অভ্যুত্থানে শক্তিশালী ভূমিকা রেখে তারা লীগ ও মুজিববাদের পরাজয় নিশ্চিত করেছেন। তারা ইতোমধ্যে তাদের রাজনৈতিক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত তথা কাফফারা আদায় করেছেন। আমি নিজে শাপলায় এসেছিলাম লংমার্চে নবীজির প্রতি ভালোবাসায়। ৫ মে তে আমি আসতে পারিনি। কিন্তু, যুদ্ধাপরাধের বিচার ও জামায়াত নেতাদের ভূমিকা নিয়ে আমাদের আগ্রহ ছিলনা। আমরা মূলত নবীজির সম্মান ও ভালোবাসা সামনে রেখে ঢাকায় এসেছিলাম। আমি শর্ষিণাপন্থী যে মাদ্রাসায় পড়েছি, সেখানে জামায়াত নেতাদের ভ্রান্ত আকিদার অনুসারী হিসেবে গণ্য করা হত। আর, জামায়াত নেতাদের ফাঁসিকে দেখা হত তাদের আলেম ও সহি ইসলাম বিরোধিতার ফসল হিসেবে। জামায়াতকে আমরা ছোটবেলা থেকে আলেম- ওলামা বিরোধী হিসাবেই জেনে এসেছি। তথ্য উপদেষ্টা বলেন, অনেকেই হয়ত খেয়াল করেন না, অধিকাংশ শাপলার কর্মীরাই আসলে জামায়াতের আকিদা (বিশ্বাস ও কর্মপন্থা) ও নেতৃত্ব বিরোধী। শাপলার অনেক নেতৃত্বই জামায়াতের আলেম ও পীরপন্থা বিরোধিতার শিকার। এমনকি অনেকেই জামায়াত ও শিবির নেতাদের কর্তৃক নিগৃহীত ও নিপীড়িত হয়েছেন। কিন্তু, জামায়াত সফলভাবেই তাদেরকে প্রক্সি হিসাবে ব্যবহার করতে পেরেছে। যেমন লীগ ‘শাহবাগী’দের ব্যবহার করেছে।
আমরা অভ্যুত্থান-উত্তর সময়ে উপনীত হয়েছি। এখানে জামায়াতকে বা শিবিরের কর্মীদের ‘রাজাকার’, ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ বলে বধযোগ্য করার যে বয়ান সেটার বিরোধী আমরা। তেমনি, শাহবাগের ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান। এ ইসলামফোবিয়ার শিকার আমি নিজে হয়েছি। পাঞ্জাবি টুপি পরলেই জঙ্গীবাদী বলা থেকে শুরু করে মাদ্রাসাছাত্রদের ও আলেমদের বিমানবিকীকরণের জন্য শাহবাগ দায়ী। শাহবাগের সাংস্কৃতিক বন্দোবস্ত বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ঊন-মানুষে পরিণত করেছিল। উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু, অভ্যুত্থান-উত্তর সময়ে একটি সংলাপমুখর সময় এসে উপস্থিত হয়েছে। শাপলা- শাহবাগের বাইনারির বাইরে এসে শাহবাগের প্রাণভোমরা-মুজিববাদ, ভারতপন্থা ও শেখ পরিবারের বিরুদ্ধে পুরাতন শাপলা ও শাহবাগের কর্মীদের ‘কমরেডস’ হয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। আসলে, শাপলা- শাহবাগের কর্মীরা কমরেডস হয়েছিল বলেই শেখ হাসিনার পতন ঘটেছিল। এদিকে, শাপলার নেতৃত্বের জন্যও কারো প্রক্সি না হয়ে রাষ্ট্রে ইজ্জত ও শরিকানা দাবির সুন্দর সুযোগ উপস্থিত হয়েছিল। আমি আমার আগের দুটি পোস্টে আলেম- ওলামাদের ধন্যবাদ দিয়েছিলাম তাদের শক্তিশালী ভূমিকার জন্য। তৌহিদবাদী জনতার নেতৃত্ব যেন ফ্রিঞ্জ এলেমেন্টের হাতে না গিয়ে মূলধারার হকপন্থী আলেমদের হাতে থাকে, এ আশা রাখি। মূলধারার আলেমরা আশা করি গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে, দেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে শাহবাগের মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। নিজেরা সে সংস্কৃতির অনুকরণ করবেন না। এক্ষেত্রে আমরা মজলুম ও গণতান্ত্রিক মূলধারার আলেমদের পক্ষেই থাকব। বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকার শাপলার গণহত্যার বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা শাপলার হত্যাযজ্ঞ ডকুমেন্টেশনের কথা বলেছেন। আশা করি, শাপলায় শহিদ মাদ্রাসাছাত্র ও আলেমদের বিরুদ্ধে যে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বর্বর শেখ হাসিনা, তার সুষ্ঠু তদন্ত, ডকুমেন্টেশন ও বিচার নিশ্চিত হবে। সাবেক ‘শাহবাগী’ যারা অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে নিজেদের ন্যায্য অবস্থান ব্যক্ত করেছেন, লড়াই করেছেন- তাদেরকে কোনভাবেই বধযোগ্য করে তোলা যাবে না। যাকে তাকে ‘শাহবাগী’ ট্যাগ দিয়ে অভ্যুত্থান- উত্তর সময়ে বৃহত্তর সংহতির সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করা যাবে না। শাপলাপন্থী কেউ যদি ভাবেন, লীগ বিরোধী ও অভ্যুত্থানের পক্ষের সাবেক ‘শাহবাগী’দের শত্রু ও বধযোগ্য বানিয়ে তারা সফল হবেন, তা কিন্তু হবে না। আপনি শাপলার হয়ে মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার দাবি করলে আপনিও তো ‘শাহবাগী’ হয়ে উঠবেন, নাকি? বামপন্থীদের মধ্যে যারা মুজিববাদ বিরোধী, তারা কিন্তু অনেক আগে থেকেই শাপলার হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে উচ্চকন্ঠ ছিলেন। ফলে,শত্রু- মিত্র ফারাক করা আমাদের জন্য খুবই জরুরি। তবে, পুরাতন ‘শাহবাগী’, যারা এখনো শাহবাগের প্রাণভোমরা- মুজিববাদ, ভারতপন্থা ও শেখ পরিবারের প্রতি আনুগত্যকে নিজেদের আদর্শ বলে মনে করেন, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া উচিত হবেনা। এরাই গুম ও গণহত্যার উস্কানি দিয়েছিল ও ন্যায্যতা তৈরি করেছিল। জুলাই গণহত্যার সময়ও এরা চুপ ছিল, কেউ কেউ বৈধতা উৎপাদনে ব্যস্ত ছিল। বিদেশ থেকে এখনো যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে সাফাই গাইছে, এদের একটা বড় অংশ শাহবাগের ফ্যাসিবাদী। এরা জনগণের শত্রু, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের শত্রু, গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু। এদের বিচার শুরু হয়েছে, শেষ ও হবে। অভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে শাহবাগে বেড়ে ওঠা মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি সব পক্ষকেই বাদ দিতে হবে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও সহনাগরিকদের সাথে মর্যাদাপূর্ণ সংলাপ ও সংহতির দিকে সবাইকে এগুতে হবে। শাহবাগের ছাত্র- তরুণ যারা মুজিববাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন, ‘ শাহবাগী’ ট্যাগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মব উস্কে দেয়া বা বিভেদ তৈরি সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। রাজনৈতিক ভেনডেট্টা থেকে হরেদরে সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করতে হবে। গণ- অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই থাকবেই। কিন্তু, গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমাদেরকে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ও মৈত্রী বাড়াতে হবে, শত্রু কমাতে হবে এবং চিহ্নিত শত্রুর দীর্ঘমেয়াদে পরাজয় নিশ্চিত করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
Copyright All rights reserved © 2024 Chapaidarpon.com
Theme Customized BY Sobuj Ali
error: Content is protected !!