‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ এ গত বুধবার (৩ আগষ্ট) বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ অনিয়ম করে শুন্য পদ দেখিয়ে ‘অফিস সহায়ক’ থাকা সত্বেও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও দীর্ঘ ২৩ বছর ‘দপ্তরী’ পদে চাকুরী করার পরও ‘নিরাপত্তাকর্মী’ হিসেবে সমন্বয় করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগের সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর ওই ৪র্থ শ্রেণীর এক কর্মচারীর চাকুরী খেয়ে নেয়ার হুমকী দিয়েছেন সয়ং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুর রশিদ। গত বৃহস্পতিবার (৪ আগষ্ট) জেলা শিক্ষা অফিসের অতিরিক্ত জেলা শিক্ষা অফিসার ফজলে রাব্বির (০১৭১৪৯২৯০৯৪) মোবাইল ফোন থেকে সরাসরি ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী মো. তোফিকুল ইসলাম এর চাকুরী খেয়ে নেয়ার হুমকী দেন। বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ৫৩ মিনিটে ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী (অফিস সহায়ক) তোফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে এই হুমকী দেন এবং রবিবার (৭ আগষ্ট) জেলা শিক্ষা অফিসে সরাসরি দেখা করতে বলেন এবং বিভিন্নভাবে শাষিয়েও দেন। ‘একজন জেলা শিক্ষা অফিসার এমন হুমকী দেয়ায় এবং ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরাসরি জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুর রশিদের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ‘একজন জেলা শিক্ষা অফিসারের এক ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে এমন হুমকী দেয়া’ কতটুকু শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে বিষয়টিও শিক্ষিত সমাজের মনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে’। এঘটনায় দরিদ্র অসহায় ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী (অফিস সহায়ক) তোফিকুল ইসলাম রীতিমত স্তম্ভিত ও নির্বাক। এমনিতেই পদ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র, তারপর আবার সয়ং জেলা শিক্ষা অফিসারের দেয়া মোবাইলে হুমকী? অনেকটায় আতংকে দিন পার করছেন তোফিকুল ইসলাম ও তাঁর পরিবার। স্থানীয়দের ধারণা, কমিটির সাথে যোগসাজস করে এবং অজ্ঞাত সুবিধা ভোগ করার লক্ষ্যেই ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন জেলা শিক্ষা অফিসার।’ অন্যদিকে, ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর প্রধান শিক্ষক একজন শ্রবন প্রতিবন্ধী হয়েও দীর্ঘদিন ধরে জেলা শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন, এই দূর্বলতায় এবং জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগসাজস করে বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। যেন তাঁর প্রধান শিক্ষকের পদটি হাতছাড়া না হয়ে যায় এই ভয়ে। এছাড়াও ‘অফিস সহায়ক’ পদে থেকে অবৈধভাবে সরিয়ে তোফিকুল ইসলামকে ‘নিরাপত্তাকর্মী’ পদে দায়িত্ব দিয়ে অফিস সহায়ক পদে প্রধান শিক্ষকের এক ভাগনেকে ‘অফিস সহায়ক’ পদে নিয়োগ দেয়ার পরিকল্পনা করছেন প্রধান শিক্ষক মো. তরিকুল ইসলাম। অন্যথায় ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর (অফিস সহায়ক) তোফিকুল ইসলামকে সরিয়ে সেখানে অন্য কাউকে নিয়োগ দিতে পারলে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিতে পারবে বলে জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে পরামর্শ করে এই অবৈধ নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানিয়েছে ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর (অফিস সহায়ক) তোফিকুল ইসলাম ও স্থানীয়রা। এছাড়াও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে প্রধান শিক্ষকের এক ভাগনে, নৈশপ্রহরী পদে ভাতিজা, আয়া পদে ভাগনী এবং অফিস সহায়ক পদে আরেক ভাগনেকে নিয়োগের জন্য সকল পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করছেন ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর প্রধান শিক্ষক এবং এজন্যই জেলা শিক্ষা অফিসারকে দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়নের সকল যল্পনা-কল্পনা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মো. তরিকুল ইসলাম লোক পাঠিয়ে শুক্রবার দুপুরে (জুম্মা নামাজ পর) তোফিকুল ইসলাম কে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার জন্য আলাদাভাবে হুমকী দিয়েছেন এবং প্রতিষ্ঠান চলাকালে নানাভাবে মানষিক ও কাজে অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক বলেও অভিযোগ তোফিকুল ইসলামসহ অন্যান্যদের। বিষয়গুলো নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগের জন্য বার বার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। উল্লেখ্য, গত ৩ আগষ্ট “অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়-সরকারী প্রজ্ঞাপন অস্বীকার ॥ শুন্যপদ দেখিয়ে নিয়োগের ষড়যন্ত্র” শিরোনামে জেলা থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’ পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরঅনুপনগর ইউনিয়নে অবস্থিত ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এ সরকারী প্রজ্ঞাপন অস্বীকার করে নিয়োগ বানিজ্য করার লক্ষে শুন্যপদ দেখিয়ে নিয়োগের ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে বলে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ হয়েছে। ‘দপ্তরী’ পদটিকে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে ‘অফিস সহায়ক’ পদবী দিলেও সেই পদকে শুন্য দেখিয়ে প্রায় ২যুগ আগে ‘দপ্তরী’ পদে নিয়োগ হওয়া ওই প্রতিষ্ঠানের মোঃ তোফিকুল ইসলামকে বাদ দিয়ে উক্ত পদে একজন নিয়োগ দেয়ার লক্ষে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রথমে ‘দপ্তরী’ এবং সরকারী প্রজ্ঞাপন জারীর পর ‘অফিস সহায়ক’ পদে দায়িত্ব পালন করার পরও এমন নির্যাতনের শিকার হওয়ায় দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে সুষ্ঠু সমাধানের আশায় ঘুরছেন ভূক্তভোগী ‘অনুপনগর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর ‘অফিস সহায়ক’ পদে চাকুরীরত মোঃ তোফিকুল ইসলাম। এদিকে, এই সমস্য সমাধান এবং নির্যাতন থেকে রক্ষায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসারের দ্বারস্থ হলেও প্রতিকার না করে উল্টো নানা ধরণের অসহযোগিতামূলক কথা বলেন জেলা শিক্ষা অফিসার বলেও জানা গেছে।