বিজয়ী হয়ে সাফ শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরেছেন নারী ফুটবল দল। সাফ শিরোপা ছিনিয়ে নিয়ে আসায় বাংলার বাঘিনীদের বুধবার প্রানভরে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশবাসী। এই বিজয়ে আনন্দে আত্মহারা বিজয়ীদলের সদস্যরা, বাফুফে এবং দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ। বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বুধবার ছাদখোলা বাসে চ্যাম্পিয়ন ফুটবলারদের যাত্রা বিকেল সাড়ে ৩টায়। বাফুফে ভবনের উদ্দেশে রওয়ানা হয় সাবিনা খাতুনের দল। বিমানবন্দর থেকে নারী ফুটবলারদের নিয়ে এই ছাদখোলা বাস মতিঝিলের বাফুফে ভবনে যায়। আগের দিনই বাসযাত্রার রোডম্যাপ জানিয়ে দিয়েছিল বাফুফে।
সেই মোতাবেক বিমানবন্দর থেকে কাকলি হয়ে মহাখালী ফ্লাইওভার দিয়ে জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পর বিজয় সরণিতে এসে তেজগাঁও হয়ে পুনরায় ফ্লাইওভার দিয়ে মৌচাক হয়ে কাকরাইলে পৌঁছান ফুটবলাররা। পরে কাকরাইল থেকে ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং মতিঝিল শাপলা চত্বর হয়ে বাফুফে ভবনে পৌঁছান চ্যাম্পিয়নরা। দুপুর দেড়টায় একটি বিশেষ বিমানে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান বাংলাদেশের ইতিহাসগড়া মেয়েরা। তাদের ফুলের মালা ও উত্তরীয় দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এদিকে, নারী সাফ শিরোপা জিতে দেশে আসা বাংলাদেশ দলকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও বাফুফে কর্তারা। এসময় বিমানবন্দরের বাইরে সমর্থকদের চরম ভীড়, সময়ের সাথে সাথে জনস্রোত রূপ নেয়। পতাকা ও ব্যানার হাতে সুসজ্জিত ব্যান্ড দল বাজাতে থাকে ‘জয় বাংলার, বাংলার জয়। নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ইতিহাস গড়া সাফল্য নিয়ে বাংলাদেশ দল কাঠমান্ডু থেকে ঢাকায় পা রাখে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, বাফুফের সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ ও অন্য কর্তারা বরণ করে নেন সাবিনা-মারিয়া-কৃষ্ণাদের। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরুতেই কেক কাটা হয়। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী কেক তুলে দেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের মুখে। শিরোপাজয়ী অধিনায়কই শুধু নন, তিনি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোল স্কোরারও। কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনকেও কেক খাওয়ানো হয়। ক্রীড়ামন্ত্রী দলের প্রত্যেক খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের গলায় পরিয়ে দেন ফুলের মালা। দুহাতে ট্রফি উঁচিয়ে চওড়া হাসিতে এগিয়ে যান অধিনায়ক সাবিনা, তাকে অনুসরণ করেন দল। বিমানবন্দরের বাইরে তখন অপেক্ষায় হাজারও জনতা। অনেকের হাতেই জাতীয় পতাকা, নানা রকম ব্যানার। বিকেএসপির একটি বড় দলও দেখা যায় সেখানে লাইন ধরে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে মেয়েদেরকে বরণ করে নিতে। বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষায় থাকা মেয়েদের স্বপ্নযাত্রার বাহন ‘ছাদখোলা’ বাসে ওঠার সময়ও ফুল ছিটিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়। বাফুফে ভবনে মেয়েদেরকে বরণ করে নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষে দলকে অভ্যর্থনা জানান বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয় দলকে। অন্যদিকে, নারী ফুটবল দলের প্রতি আরও বেশী বেশী যত্নবান হওয়ার আশাবাদ ক্রীড়া সংগঠক ও সচেতন মহলের। সব মিলিয়ে সাফ শিরোপা বিজয়ীদের নিয়ে গর্বিত বাংলার মাটি ও দেশবাসী।