চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার কুইচাগাঁড়ায় ২ ডাকাতের ছুরিকাঘাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শেষ সীমানায় গোমস্তাপুর উপজেলার বেলালবাজার-আড়গাড়াহাট সড়কের কুইচাগাঁড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কৃষক শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের ধূমানীনগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আলমগীর রেজা জুয়েল (৩০)। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার সকালে জুয়েল ও তার সহযোগী সাদ্দাম হোসেন মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি থেকে নাচোল উপজেলার গোলাবাড়ি পেয়ারবাগানে যাবার সময় বেলালবাজার-আড়গাড়াহাট সড়কের কুইচাগাঁড়ায় ২ জন ডাকাতের কবলে পড়ে। এ সময় ঐ ২ ডাকাত মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সবকিছু কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এতে জুয়েল অস্বীকৃতি জানালে ডাকাতরা চাকু দিয়ে জুয়েলকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এসময় তার সাথে থাকা সাদ্দাম নিরাপদ দুরত্বে সরে গিয়ে আত্মরক্ষা করে। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় জুয়েলকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। নিহত জুয়েলের সাথে থাকা সাদ্দাম ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে। এছাড়াও জুয়েলকে ছুরিকাঘাত করার কিছুক্ষন আগেই জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের বেলাল বাজার-আড়গাড়া রোডে সকাল ৬টার দিকে ছিনতাইকারীরা এক ভ্যানওয়ালা সবজি বিক্রেতা তার কাছ থেকে মোবাইল এবং টাকা নেয়। তারপরই জুয়েলকে ধরে ডাকাতদল বলে স্থানীয় একটি সুত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ চৗধুরী জুবায়ের হোসেন জানান, শিবগঞ্জ উপজেলার শেষ সীমানায় ছুরির আঘাতে জুয়েল নামে একজন মারা গেছে। মরদেহ নিহতের বাড়ীতে রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ডাকাত ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছে। কিভাবে ঘটনা ঘটেছে বিষয়টি তদন্ত করে পরে জানানো হবে। পুলিশ দায়িত্বে থাকার পরেও প্রায়ই ওই সড়কে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। কিছু ডাকাত আইনশৃঙ্খলা বাহিনির হাতে আটক হয়ে কারাগারে গেলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারও ডাকাতিতে জড়িয়ে পড়ছে। সুযোগ বুঝেই মানুষের কাছ থেকে সব ছিনিয়ে নিয়ে স্বর্বশান্ত করে দিচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকেই ওই রাস্তায় ডাকাতি-ছিনতায় এর ঘটনা ঘটছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেষ্টা চালাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। ওই রাস্তায় সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে আতংক। একান্ত নিরুপায় হয়ে যারা ওই রাস্তা দিয়ে রাতে যাতায়াত করেন, তাঁরা আতংকের মধ্যে দিয়েই রাস্তা পার হন। আর সুযোগ পেলেই ডাকাতদল মানুষের উপর হামলা চালিয়ে সব কিছু কেড়ে নেয়। প্রতিবাদ করলেই বেধড়ক মারধর বা ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। ডাকাতি বন্ধে ওই রাস্তায় প্রতিদিনই টহলে থাকে উভয় থানা পুলিশ তারপরও ঘটনা ঘটে। ডাকাতি-ছিনতায় বন্ধ না হওয়ায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষ ও সচেতন মহলের মাঝে।