চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলছে দুইদিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা-২০০২। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ১৬ নভেম্বর বুধবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কালেক্টরেট ইংলিশ স্কুল মাঠে এ মেলার উদ্বোধন করেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ সামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুল। মেলায় জেলার ৫টি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবন প্রদর্শন করে। উদ্ভাবনী মেলায় অংশগ্রহন, প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা নিয়ে কথা অংশগ্রহনকারী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে। শিক্ষার্থীরা জানান, নানা প্রতিকুলতার মাঝে তারা উদ্ভাবনী মেলায় অংশগ্রহন করেছে। তারা জানায়, তাদের উদ্ভাবনী বিকশিত করতে হলে শুধু মেলায় অংশগ্রহন করা, আর বিজয়ী হয়ে একটা ক্রেস্ট প্রদান যথার্থ নয়। আর শিক্ষকগণ জানান, গবেষনার জন্য বিদ্যালয়ে কোন বাজেট না থাকা এবং এবিষয়ে সরকারি কোন অনুদান না থাকায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের যথাযথ সহযোগিতা করা যাচ্ছেনা। মেলায় অংশগ্রহনকারী হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র ক্ষুদে বিজ্ঞানী নাফিস মাহফুজ জানায়, একটা প্রজেক্ট করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে এবং পৃষ্টপোষকতা না পাওয়ায় তা করা সম্ভব হয়নি। সাইন্স ক্লাব, বাজেট এবং গবেষনার শিক্ষক না থাকায় তারা তাদের মেধা বিকাশ ঘটাতে পারছেনা বলে জানায় নাসিম। বাজেট এবং সার্বিক সহযোগিতা পেলে তারা অনেক কিছু আবিস্কার করতে পারবে বলে জানায় সে। নাচোল খ. ম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান লিসা বলেন, ক্ষুদে বিজ্ঞানী তৈরী করতে স্কুল পর্যায়ে মনোযোগ দিতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় অংশগ্রহন করে ১ম স্থান অধিকার করে একটা ক্রেস্ট পেয়েছি। আমরা যে প্রজেক্ট করেছি তাতে বেশকিছু অর্থ ব্যয় হয়েছে। শ্রম দিতে হয়েছে। লিসার প্রশ্ন-বিদ্যালয় থেকে কতদিন আর কত সহায়তা দিবে। ক্ষুদে বিজ্ঞানী তৈরী করতে শিক্ষার্থীদেরকে আর্থিক সহযোগিতা দেবার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানায় লিসা। শিবগঞ্জ উপজেলার সত্রাজিতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে এবং ক্ষুদে বিজ্ঞানী সৃষ্টি করতে প্রত্যেক বিদ্যালয়কে সরকারি বরাদ্দ দেয়া জরুরী। বিদ্যালয় হতে সবসময় এদেরকে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া সম্ভব হয়না। একই বিদ্যালয়ের ভৌত বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক মামুনুর রশিদ বলেন, বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য কোন অনুদান পাওয়া যায়না। তাই ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা অঙ্কুরেই ঝরে পড়ে। এক্ষেত্রে সরকারের অনুদান পাওয়া গেলে অনেক ক্ষুদে বিজ্ঞানী সৃস্টি হবে বলে তিনি জানান। জেলার ঐতিহ্যবাহী হরিমোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইউসুফ আলী জানান, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিজয়ী ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের যদি ঠিকমত নার্সিং ও ফান্ডিং করা হয় তাহলে এরা এক পর্যায়ে গিয়ে বিকশিত হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করবে। তিনি প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ক্লাব এবং নার্সিং করার জন্য শিক্ষক রাখার ব্যবস্থা করার দাবি জানান। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. শংকর কুমার কুন্ডু, ‘ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার আয়োজন সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য উল্লেখ করে বলেন, জেলা পর্যায় থেকে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের খুঁজে বের করে সরকার তাদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দিয়ে যোগ্য করে গড়ে তুলবেন বলে তিনি আশাবাদী। এবিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আনিছুর রহমানের নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে-তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। উল্লেখ্য, বুধবার শুরু হওয়া ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা-২০২২ এর সমাপনী অনুষ্ঠান বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী দিনে বিজয়ী ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের পুরস্কৃত করা হয়।