বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের পবিত্র দিন ছিল গত বৃহস্পতিবার। চন্দ্র মাসের তারিখ হিসাবে প্রতিবছর রাজশাহী অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ১৬ই ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) তর্ত্তিপুর নামক স্থানে পৌরণিক জাহ্নুমুনির আশ্রমের কাছে গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে থাকেন।
বয়বৃদ্ধদের নিকট থেকে জানা যায়, এ গঙ্গাস্নান অধিকাংশ বছরই মাঘ মাসে অনুষ্ঠিত হয় বলে একে মাঘী বান্নী স্নান বলে। কিন্তু চাঁদের উপর নির্ভর করে কোন কোন বছর ফাল্গুন মাসেও গঙ্গা স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী অঞ্চলের নাটোর, নওগাঁ এলাকা থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুরুষ-মহিলারা বাস, মিনিবাস, মাইক্রো, মিশুক, রিক্সাসহ বিভিন্ন প্রকার যানবহন যোগে দূরদূরান্ত থেকে গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য পূর্বদিন থেকেই পৌরণিক জাহ্নুমুনির আশ্রমে আসতে শুরু করে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের আসা অব্যাহত ছিল সকলে স্থানীয় গঙ্গায় স্নান পর্ব শেষ করে বিভিন্ন ধরণের ভুরি ভোজ করে থাকে। এই ভুরি ভোজের মধ্যে স্থান পায়- মুলত: শিবগঞ্জের বিখ্যাত চমচমসহ অন্যান্য মিষ্টান্ন দ্রব্য, রাজারামপুর ও নসিপুরের দই, রহনপুরের মুড়ি ও চিড়া এবং ভোলাহাটের সাগর কলা।
প্রায় মহিলারা বাড়ি ফেরার সময় নানা ধরনের মাটির পাত্রে সযতে গঙ্গার পবিত্র জল নিয়ে যায়। অনুষ্ঠানে আগত আনুমানিক ৮৯ বছর বয়স্কা শান্তি দেবী নামে এক বৃদ্ধার কাছ থেকে জানা যায়- সংগৃহীত এ পবিত্র জল সমগ্র বছর বাড়িতে রেখে বিভিন্ন পূজা পার্বনে ব্যবহার করে থাকে।
উল্লেখ্য, এ গঙ্গাস্নান উপলক্ষে তর্ত্তিপুর মেলায় কাঠের সামগ্রী, বাঁশ-বেত সামগ্রী ও লোহা লক্কড়ের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের স্টল বসে। এ অনুষ্ঠানে আগত হিন্দু মহিলারা বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র ক্রয় করে নিয়ে যায়।