চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ও নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম ও হরিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মতিন মাস্টার খুনের ঘটনায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন নিহত আব্দুস সালামের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম। শুক্রবার (২৮ জুন) রাতে তিনি মামলাটি দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামী করা হয় সালাম গ্রুপের প্রধান প্রতিপক্ষ নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফুল হক কে।
এ মামলায় শিবগঞ্জ থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামী আশরাফুল হকের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম আম্বিয়া (৪৫) এবং ঘোড়াপাখিয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ আশরাফুল হক কে গ্রেপ্তার করেছে। শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ও নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম ও হরিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মতিন মাস্টার খুনের ঘটনায় ৫২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন নিহত আব্দুস সালামের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম। শুক্রবার (২৮ জুন) রাতে তিনি মামলাটি দায়ের হয়েছে। এঘটনায় এজাহারনামীয় দুইজন কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ৮ দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার রাণীহাটি ডিগ্রি কলেজের সামনে আধিপাত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে আতর্কিত বোমা হামলা ও গুলিতে ২ জন নিহত হয়। এঘটনায় আহত হয় আর ২জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ও নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুস সালাম (৪৮)। তিনি সাবেক লাভাঙ্গা মোড়লটোলা গ্রামের মৃত ইত্তাজ আলীর ছেলে। অপরজন হলেন তার সহযোগী হরিনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল মতিন মাস্টার। আব্দুল মতিন একই ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের মূত আব্দুল মান্নানের ছেলে। আহতরা হলেন, মোঃ রহিম বাদশা ও আব্দুস সালাম টিটো। ঘটনার পরপরই নিহতের সমর্থকরা রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে ও আগুন জালিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সুত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে রাণীহাটি ডিগ্রি কলেজের সামনে আশ্রয়ণ প্রকল্পের গুচ্ছ গ্রামের কাছে আব্দুস সালামসহ কয়েকজন বসে ছিলেন।
এ সময় দুর্বৃত্তরা অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। দুর্বৃত্তদের হামলায় ঘটনাস্থলেই আব্দুস সালাম নিহত হন। তাঁর মুখ-মন্ডলে এলোপাতাড়ি চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শিক্ষক মতিনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের বাঁচাতে গিয়ে আরও ২ জন আহত হন। আহতরা হলেন, মহারাজপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের এস্তাম আলীর ছেলে আব্দুর রহিম বাদশা ও রাণীহাটি ফতেপুর এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুস সালাম টিটু। আহত টিটুও গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।