বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় স্বাধীনতার মূল চেতনা-সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার ভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের নতুন পথযাত্রায় জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সারাদেশে জেলাভিত্তিক দিক-নির্দেশনামূলক যৌথ কর্মীসভা অংশ হিসেবে যৌথসভা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টাউন ক্লাব মিলনায়তনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ও উপজেলা, ইউনিয়ন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মীসভা হয়। জেলা ও উপজেলা, ইউনিয়ন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ কর্মী সভায় সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান বলেন, শেখ হাসিনার পতন ছাত্র-জনতার বিজয়ের প্রথম অর্জন।
ছাত্র-জনতার বিজয় ধরে রাখতে হলে রাজনৈতিক দলের সরকার গঠন করা অতিব জরুরি। মনের রাখতে হবে ক্ষমতা পেয়ে অহংকার করলে হবে না। কারণ শেখ হাসিনার অহংকারের কারণেই দেশের আজ এই অবস্থা। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে বিভিন্ন অপকৌশল করছে। এসব বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকবে হবে। অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। তাই পুলিশ, সেনাবাহিনী ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করলে, তাদের প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতে যে রূপরেখা তৈরি করেছেন, তা জনগণ গ্রহণ করেছে। সেই আলোকে আমাদের কাজ করতে হবে।
ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, নারী-শিশু, কৃষকসহ সবাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছে। অথচ পতনের দুদিন আগে শেখ হাসিনা বলেছিলো, শেখের বেটি পালিয়ে যায় না। শেখ হাসিনা খুনি, তার শরীরে রক্তের দাগ। সে সাধারণ ছাত্র-জনতার ওপর নির্মমভাবে গুলি করে গণহত্যা চালিয়েছে। হেলিকাপ্টার থেকে গুলি করেছে। শেখ হাসিনা ছাড়া এর আগে কোনো সরকার প্রধান পালিয়ে যায়নি।
রাজিব আহসান আরোও বলেন, এই দেশে আওয়ামীলীগ গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। এখন দেশের মানুষকে গুপ্তহত্যা করবে। বর্তমানে তারা ভয়ংকর গুপ্ত হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই বিষয়ে আমাদের সর্তক থাকবে হবে। যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে সব কিছু বিচার হতে হবে। প্রধান বক্তা ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, সারাদেশে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ ধংসাত্মক কর্মকাণ্ড করছে। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কোনো ধংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। আওয়ামীলীগ-বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম ও নিপীড়ন করেছে। কিন্তু বিএনপি এসব প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করে না। বিএনপির নাম করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট যারা গণভবনে গিয়েছিল, তারা কেউ বিএনপির নেতাকর্মী না। সাধারণ মানুষ ক্ষোভের কারণে এসব হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় কি হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। কিন্তু আমাদের দেশে তা হতে দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরে আওয়ামীলীগ সকল অর্জনকে তাদের বলে প্রচার চালিয়েছে। ঐ সময় থেকেই বৈষম্যের শুরু হয়। এবারও এই ১৭ বছরের লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে নতুন স্বাধীনতার এসেছে, তখন শোনা গেল এই আন্দোলন শুধু ছাত্ররা করেছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের কঠিন নির্দেশনা দিয়েছেন। বিগত আন্দোলন সংগ্রাম হিসাব করে মূল্যায়ন করা হবে। তিনি (তারেক রহমান) নির্দেশ দিয়েছেন, আপাতত ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কোন যোগদান হবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, এই অভ্যুত্থান সকল রাজনৈতিক দলের ভূমিকা রয়েছে। বিশেষত যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের অসাম্য ভূমিকা ও সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের নেতৃত্বে। তাই যারা এই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান নিয়ে কথা বলছেন এগুলো বিচার বিবেচনা করে বলবেন। এই আন্দোলনে একক কারো ক্রেডিট থাকলে একমাত্র তারেক রহমানকেই দেওয়া উচিত।
যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জুয়েল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ তবিউল ইসলাম তারিফ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা, ইউনিয়ন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।