টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় শনিবার সকাল থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভারী গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিকট আওয়াজ শোনা যায়। গ্রামের ভেতরে একটি বাড়িতে গুলিও এসে পড়েছ। এছাড়া শনিবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় ২টি গোলা উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা মর্টার শেল বললেও এগুলো মূলত আরপিজি বা রেকট প্রপেলড গ্রেনেড।
আরপিজিগুলো নিয়ে কয়েকটি শিশুকে খেলতে দেখে সেগুলো বাড়িতে নিয়ে যান এক নারী। পরে সেগুলো বিজিবির কাছে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া কক্সবাজারের উখিয়া ও ঘুমধুমে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। এদিকে কক্সবাজারের উখিয়ায় নাফ নদীর তীর ঘেঁষে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে নির্মাণাধীন সড়কের ঢালে এবং সীমান্তের ওপারে কয়েকটি লাশ পড়ে থাকার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ামানের ভেতর থেকে শনিবার গোলাগুলির কোনো আওয়াজ না পাওয়া গেলেও সীমান্তের এপারে আতঙ্ক তৈরি করেছে জমির পাশে পড়ে থাকা আরপিজি। শনিবার সকালে অবিস্ফোরিত অবস্থায় দুটি আরপিজি পাওয়া গেছে বলে ঘুমধুমের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান। তিনি বলেন, নতুন করে পাওয়া ২টি মর্টার শেল (আরপিজি) লাল পতাকা দিয়ে ঘীরে রেখেছে বিজিবি। ক্ষেত-খামার, কৃষি জমিতে মিয়ানমারের এসব পাওয়া যাচ্ছে। অবিস্ফোরিত এসব গোলা সীমান্তের বাসিন্দা ও শিশুরা অনেক সময় না বুঝেই ধরছে, খেলাধুলাও করছে। ফলে আতংক তৈরি হয়েছে।
তবে ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে নতুন করে কোনো গোলাগুলির শব্দ শুনা যায়নি। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তখন এপারে গুলি এসে পড়েছিল।
শনিবার সকালে ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে আরপিজি দেখতে পাওয়া নারী বলেন, জমিতে কাজ করছিলাম। তখন দেখি শিশুরা লম্বা লোহার রডের মতো একটি জিনিস নিয়ে খেলছে। তখন ওদের কাছ থেকে জিনিসটা নিয়ে বাসায় চলে আসি। পরে স্বামী বলে এটি অস্ত্র। তার পরপরই বিজিবিকে এটি হস্তান্তর করি। মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গোলা ও গুলিতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশি এক নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছে অন্তত ৮ জন। রাতে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও শনিবার সকাল থেকে টেকনাফ সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের ভেতর থেকে গুলি আর মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য ছেনুয়ারা বেগম। কক্সবাজারের উখিয়ার নাফ নদীর তীর ঘেঁষে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে নির্মাণাধীন সড়কের ঢালে গত দুদিন ধরে একটি লাশ পড়ে থাকার খবর দিয়েছে গ্রামবাসীরা।
তবে সংঘাতপূর্ণ এলাকার ফায়ারিং রেঞ্জের মধ্যে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা ঝুঁকিপূর্ণ বলে জটিলতা দেখা দিয়েছে। উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন বলেন, আমাদের সীমান্তের এপাড়ে একটি লাশ পড়ে থাকার কথাই আমরা জেনেছি। আর সীমান্তের ওপারে আরও কিছু লাশ পড়ে থাকতে পারে বলে স্থানীয় লোকজন মারফত জানা গেছে। বিজিবির সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তারা লাশ উদ্ধারের উদ্যোগে নিচ্ছে।