রাজশাহীর পবা উপজেলায় পদ্মা নদীর চরে কৃষকের প্রায় এক কোটি টাকার ফসল নষ্ট করে বৃক্ষরোপণের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি উপজেলার চর মাজার দিয়াড়ে মাসকলাই নষ্ট করে সামাজিক বন বিভাগ এমনটা করেছে বলে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ। তবে সেগুলো খাস জমি বলে দাবি বন বিভাগের। জানা গেছে, জেলার পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড এরিয়া চর মাজারদিয়াড়। যেটি মূল শহর থেকে পদ্মায় বিভক্ত হয়ে নদীর ওপারে অবস্থিত। নদীর পানি কমলে সেখানে বিভিন্ন ফসল আবাদ করে থাকেন স্থানীয়রা। টমেটো, বেগুন, মাসকালাইসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে আসছিলেন তারা। এবারও সেই চর এলাকায় প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে কৃষকরা মাসকলাই চাষ করেন।
কৃষকরা জানান, চর এলাকার প্রায় ৩ হাজার বিঘা জমি দীর্ঘদিন থেকে ভোগদখল করে ফসল ফলিয়ে আসছিলেন তারা। তাদের জীবিকা নির্বাহের মূল উৎস ছিল এসব জমি। শাকসবজি চাষ করে তা উত্তোলনের পর নৌকাযোগে পাঠাতেন শহরে। কিন্তু ১৫ দিন আগে হঠাৎ বন বিভাগের লোকজন সেখানে গিয়ে তাদের ফসল নষ্ট করে গাছের চারা লাগাতে শুরু করে। কৃষকরা জানানা, পৈতৃক ও ক্রয় সূত্রে তারা এসব সম্পত্তির মালিক। জমির বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। সেখানে ভুক্তভোগী কৃষকদের মধ্যেচর মাজার দিয়াড় গ্রামের জাব্বার মোল্লার ছেলে রমজানের ১৫০ বিঘা, মৃত আশরাফ হোসেনের ছেলে মতিউর রহমানের ৮০ বিঘা, মৃত শাবদুলের ছেলে ইলিয়াসের ৭০ বিঘা, মৃত রহেদ বক্সের ছেলে আবুল হোসেনের ৬০ বিঘা, রয়েস উদ্দিনের ছেলে হাবিবুর রহমান বাবুর ৩৮ বিঘা ও মকছেদের ছেলে মিঠুর রয়েছে ৬০ বিঘা জমি। এছাড়া মুকুল আলী, রুবেল হোসেন ও হিটুর নামে ২৫ বিঘা করে জমি রয়েছে। এসব জমির মাসকলাই নষ্ট করার ফলে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকদের অভিযোগ। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি ফসলের জমিতে এসেছে দলিল ও কাগজপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান ভুক্তভোগীরা। অবিলম্বে ক্ষতিপূরণসহ জায়গা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে কৃষকদের অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছে সামাজিক বন বিভাগ। এ বিষয়ে সামাজিক বন বিভাগের রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান শাহ্ বলেন, কৃষকদের অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়। ওগুলো সরকারি খাস জমি। রাজশাহী ডিসি অফিসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আমরা বৃক্ষরোপণ করছি। জমির ব্যাপারে ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা ভাল বলতে পারবেন। আমরা কৃষকদের কোনো ক্ষতি করছি না, আমাদের অফিসের কাজ করছি।