নাটোরে ৩২ বছর ধরে ভূয়া সনদ দেখিয়ে চিকিৎসক সেজে সার্জারী করা করিম লোহানী নামে ভূয়া ডাক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, সকালে প্রসুতি মায়ের সিজার করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক করিম লোহানী। দুপুরে মারা যায় জন্ম নেয়া শিশুটি। অন্যের সার্টিফিকেটে নিজের ছবি লাগিয়ে তৈরি করেছেন এমবিবিএস পাসের সার্টিফিকেট। বনে যান এমবিবিএস ডাক্তার। এভাবে চিকিৎসক হিসেবে কেটে গেছে ৩২ বছর। দেখেছেন অনেক রোগী। দিয়েছেন চিকিৎসা। করেছেন অসংখ্য সিজারিয়ান অপারেশন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় আটক হলেন সেই ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার করিম লোহানী। তাকে আটকের পর কর্মস্থল ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। সোমবার রাত ৯টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল বাজারের জাহাঙ্গীর জেনারেল হাসপাতালে ঘটেছে এমন ঘটনা। এই হাসপাতালে বছরের পর চিকিৎসা দিয়েছেন ওই ভুয়া ডাক্তার। আটক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তারের নাম করিম লোহানী উপজেলার চকপাড়া গ্রামের বাহাজ উদ্দীনের ছেলে। আগে তার বাড়ি ছিল পাবনায়। বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খুরশিদ আলম এবং বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খুরশিদ আলম বলেন, এঘটনার করিম লোহানীকে ডাক্তারির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি এলোমেলো উত্তর দেয়ায় সার্টিফিকেট দেখতে চাই আমরা। তার সার্টিফিকেটটি যাচাই করার জন্য মেডিক্যাল বোর্ডের ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যায়, অন্যের সনদে নিজের নাম জুড়ে দিয়েছেন। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন অন্যের সার্টিফিকেটে নিজের ছবি লাগিয়ে এমবিবিএস পাসের সার্টিফিকেট বানিয়েছেন। পরে তাকে আটক করে পুলিশ। তাকে আটকের পর ওই ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি ২০১৯ সালে রাজশাহীতে আটক হয়ে তিন মাস জেল খেটে বের হন। এছাড়া ওই ক্লিনিক মালিক জাহাঙ্গীর আলমও এমবিবিএস পাস না করে নিজের নামের পাশে ডাক্তার লিখে অবৈধ চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এসব কারণে ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করে মঙ্গলবার ওই ভুয়া ডাক্তারকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।