সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। রাজধানীতে শীত অতটা না থাকলেও সারাদেশের শীত জেকে বসেছে। শীতের এবার আবারও পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এসেছে। শীতে কস্টে দিন কাটাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ আবওহাওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেন। বুধবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। আবহাওয়া তথ্যানুযায়ী, গত ১৬ ডিসেম্বর থেকেই ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে।
গত ১৯ ডিসেম্বর রেকর্ড হয়েছিল ৯.৫, ১৮ ডিসেম্বর ৯.৭, ১৭ ডিসেম্বর ১০ ও ১৬ ডিসেম্বর ৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে ২৫ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৭টা থেকেই দেখা মেলে সূর্যের। সূর্যের কিরণে আলো ছড়ালেও রাত থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তাপমাত্রার পারদ কমে কনকনে ঠাণ্ডা বইতে থাকে। স্থানীয়রা জানান, বিকেল থেকে হিমেল বাতাসে সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রাটা বেশি বাড়ে এখানে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বৃদ্ধি পায় অধিক হারে। তবে সকাল ১০টা থেকেই দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকছে। স্থানীয়রা জানান, সকালে কুয়াশা না থাকলেও প্রচণ্ড ঠান্ডা। রাতে বৃষ্টির ফোটার মতো শিশির ঝরার শব্দ শোনা যায়। ঘরের মেঝে থেকে শুরু করে আসবাপত্র ও বিছানা পর্যন্ত বরফ হয়ে ওঠে। সকালে গৃহস্থালী করতে গিয়ে কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। এ সময়টাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে হচ্ছে। এদিকে বরফঝরা শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে হিম সকালেই কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলে পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, ভ্যান চালক, দিনমজুর থেকে নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষদের। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়েন কাজে। মহানন্দা ও ডাহুক নদীতে পাথর তোলা শ্রমিকরা জানান, নদীর পানি বরফের মতো ঠান্ডা। পাথর তোলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। এ পাথর তুলেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। তাই পেটের তাগিদেই বরফ জলে নেমে পাথর তুলতে হচ্ছে। এদিকে, শীতের কারণে বাড়তে শুরু করে বিভিন্ন শীতজনিত রোগ ব্যাধি। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে। চিকিৎকরা চিকিৎসরা পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন। জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।