নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে অনেক সুবিধাভোগী সরকারি ভাতার টাকা হারাচ্ছেন। প্রতারক চক্র নানা কৌশলে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে গত এক সপ্তাহে থানায় অন্তত ৪ টি জিডি হয়েছে। এর বাইরে অনেকে প্রতিদিন সমাজসেবা কার্যালয়ে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। নিয়ামতপুর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১০ হাজার ৮৪৬ জন বয়স্ক, ৬ হাজার ৩৯৪ জন বিধবা ও ৩ হাজার ৬৮৩ জনের নামে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড রয়েছে। কার্ডধারী প্রত্যেক বিধবার নামে বরাদ্দ প্রতি তিন মাসে ১৬৫০ টাকা, বয়স্কদের ১৮০০ টাকা ও প্রতিবন্ধীদের ২৫৫০ টাকা। সেই হিসেবে পরপর এক বছরে চার কিস্তিতে তাঁদের টাকা দেওয়া হয়। গত বছর থেকে এসব কার্ডধারীদের মুঠোফোনে নগদ হিসাব নম্বর খুলতে বলা হয়। সেই হিসাব নম্বরে ভাতার টাকা পাঠানো হয়। ভাতাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ কার্ডধারীরা টাকা তোলার সময় তাঁদের মুঠোফোন হিসাব নম্বরের গোপন পিনকোড এজেন্টদের কাছে বলে দেন। এজেন্টরা গোপন পিনকোড প্রতারক চক্রকে জানিয়ে দেয়। এভাবে প্রতারক চক্র টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আকলিমা বয়স্ক ভাতা পান। তিনি বলেন, ভাতার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের টাকা তুলতে এজেন্টের কাছে গেলে তাকে জানানো হয়, টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। প্রতারণার শিকার কয়েকজন থানায় জিডি করেছেন। অনেকে সমাজসেবা অফিসে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান বলেন, এ ধরনের অভিযোগ শুধু নিয়ামতপুরেই নয়, সারা দেশে একই অবস্থা হয়েছে। তথ্যপ্রমাণের অভাবে প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ হচ্ছে না। এ ব্যাপারে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ মোরশেদ বলেন, ভাতাভোগীদের মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টের বর্তমান পিন নম্বর পরিবর্তন করতে হবে এবং পিন কারো কাছে শেয়ার করা যাবে না। ভুক্তভোগীদের থানায় জিডি করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।