রাজশাহী মহানগরীতে এই নারী প্রথমবারের মতো কাটাখালী পৌরসভার মেয়র পদের উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন রাবেয়া সুলতানা মিতু। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে রাবেয়ার পাওয়া ভোটের ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ। ভোটের পর এর ফলাফল নিয়ে এখন বিশ্লেষণ চলছে। রাজশাহীর আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে রাবেয়ার এই বিজয়কে একটু আলাদা চোখেই বিচার করা হচ্ছে। কারণ, তাঁর জয়ের নেপথ্যে রয়েছেন স্বামী সাবেক মেয়র মোঃ আব্বাস আলী। তিনি পৌর আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। ঘরোয়া আলাপের একটি অডিও ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং এই অডিওকে কেন্দ্র করে করা মামলার কারণে প্রায় একবছর তিনি কারাভোগ করেন। তখন তাকে মেয়রের পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়। স্থানীয় রাজনীতিতে আব্বাস কোণঠাসা হওয়ার পরে তাঁর জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন দলের নেতা আবু শামা। তিনি পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতির পদও পেয়ে যান। এই উপনির্বাচনে তিনি মেয়র প্রার্থীও হয়েছিলেন। তবে ভোট পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ৪৮৭ ভোট। আর আব্বাসপত্নী রাবেয়া পেয়েছেন ৬ হাজার ৩০৮ ভোট। আব্বাসবিরোধী হিসেবে পরিচিত পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম রিপন পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৩৩৯ ভোট। সাবেক শিবির নেতা মিজানুর রহমান পেয়েছেন ২ হাজার ৯১৭ আর জামায়াত নেতা সিরাজুল হক পেয়েছেন মাত্র ৩৮৪ ভোট। ভোটের ফলে কয়েকজন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। এই নির্বাচনে রাবেয়ার বিজয়কে স্বামী আব্বাস আলীর বিজয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, কাটাখালী এলাকাটি একসময় জামায়াত অধ্যুষিত ছিল। এবারের উপনির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মিজানুর রহমানের বাবা জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পৌরসভা গঠনের পর মেয়রও হন। সবমিলিয়ে প্রায় দেড় দশক তিনি কাটাখালীর জনপ্রতিনিধি হিসেবে জামায়াতকে শক্তিশালী করেন। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের মনোনয়নে দুইবার মেয়র হয়ে আব্বাস আলী জামায়াতের সেই শক্তি ভেঙে দেন। তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ শক্তিশালী হয়। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দীরা তাঁকেই কোণঠাসা করে তাঁর জায়গা দখলের চেষ্টা করেছিলেন। তারা কিছুদিন সুযোগ পেয়ে কাটাখালীতে সন্ত্রাস শুরু করেছিলেন। এই ভোটে অনেক ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হয়েছে। ভোটে আব্বাসের স্ত্রীর জয় মানে আব্বাসেরই জয়।
স্বামীর দিকনির্দেশনা নিয়েই পৌরসভাকে এগিয়ে নিতে চেয়ে রাবেয়া বলেন, ‘আমার স্বামী এই পৌরসভার দুইবারের মেয়র ছিলেন। তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আমি নতুন হলেও তাঁর দিকনির্দেশনা নিয়ে পৌরসভাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমি কাজ করব।