নওগাঁ সদর উপজেলার দোগাছী স্কুলপাড়া গ্রামে বিস্কুট খেয়ে খাদিজা (৬) ও তাবসসুম (৮ মাস) মাস বয়সের সহোদর ২ শিশু কন্যার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে। একইসঙ্গে বিস্কুট খেয়ে মইন ইসলাম (১৬) নামে আরও এক কিশোর অসুস্থ হয়েছে। তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে কিশোর চিকিৎসকদের নিবির পর্যবেক্ষণে রয়েছে। মৃত খাদিজা ও তাবাসসুম দোগাছী স্কুল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা জহুরুলের মেয়ে। অসুস্থ মইন একই গ্রামের পাইলটের ছেলে। শিশুদের চাচা শাহজাহান জানান, দুপুর দেড়টার দিকে খাদিজা, তাবাসসুম ও মইন নামে ওই তিন শিশু বাড়ির পাশের কামরুজ্জামানের মুদি দোকান থেকে বিস্কুট কিনে খায়। এর কিছুক্ষণ পরই তারা লাগাতার বমি করতে থাকে। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে দ্রুত নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর তাবাসসুম (৮) কে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। খাদিজা ও মঈনকে নওগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ওইদিন সন্ধ্যার কিছু আগে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রামেকে নেওয়ার পথে খাদিজার মৃত্যু হয়। আত্মীয় স্বজন ও গ্রামবাসীরা জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ বিস্কুট খাওয়ার কারণেই ওই দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে মুদি দোকানী কামরুজ্জামান বলেন, আমি বিস্কুটগুলো পাশের শান্তাহার শহরের ডিলারের নিকট থেকে এই কিনেছি। আকিজ কোম্পানির ডেনিস বিস্কুট। এগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে কিনা, তা আমি সঠিকভাবে বলতে পারব না। এদিকে, নওগাঁ সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ আনসার আলী বলেন, ওই তিন শিশুর মধ্যে তাবাসসুম হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে। খাদিজা ও মইনকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়। তবে খাদিজার অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে রাজশাহী হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পথে খাদিজার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত বমি ও পানিশূন্যতার কারণে ওই দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এতে বিস্কুটের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে কিনা তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। বুধবার সকালে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। ভিসারা রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হবে। নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, বিস্কুট খাওয়ার পর ওই তিন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।