চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তে-ভাগা আন্দোলনখ্যাত বিরঙ্গনা কিংবদন্তি বিপ্লবী নেত্রী রাণী ইলামিত্রের ২২তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় রানী ইলামিত্র স্মৃতি সংসদ’র আয়োজনে উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের ইলা-মিত্র মট ও সংগ্রহশালা প্রাঙ্গনে এ অনুষ্ঠান হয়। ইলামিত্রের প্রতিকৃতিতে মাল্যে অর্পণের পর প্রার্থনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইলামিত্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি বিধান শিং এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সবুজ হাসান। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির চাঁপাইনবাবগঞ্জের সভাপতি ইসরাইল সেন্টু, দৈনিক গৌড় বাংলা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক সাজিদ তৈহিদ, সাংবাদিক এ কে এম জিলানী, লেখক ও গবেষক আলাউদ্দিন (বটু), উপজেলা বিআরডিবি অফিসার হারুন অর রশিদ, ৩নং ওয়ার্ড সাবেক মেম্বার আব্দুস সামাদ, ২নং ওয়ার্ড মেম্বার পিন্টু, সংরক্ষিত মহিলা রেবিনা বেগম, ভেষজ চিকিৎসক আমিন কর্মকার প্রমূখ। বক্তারা এই মহিয়সী নারীর তেভাগা আন্দোলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নাচোলের জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সন পর্যন্ত ততকালীন ভূমি মালিকদের সাথে বর্গচাষিদের জমিতে ফসল উৎপাদনের ন্যয্যতা নিয়ে জটিলতার বিষয়ে জমিদার পত্নী হয়েও বরেন্দ্র অঞ্চলে তাঁ স্বামী শ্রী রমেন মিত্রের জমিদারীতে বর্গাচাষিদের উৎপাদন খরচ হিসেবে এক ভাগ, ফসলের বর্গাদার হিসেবে একভাগ অবশিষ্ট একভাগ জমি মালিকের এ হিসেবটির নামই তেভাগা। এটিই পরবর্তীতে তে-ভাগা আন্দোলন হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ততকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকার কমরেড ইলামিত্রের ওই আন্দোলনকে রাজনৈতিক অর্থাৎ রাস্ট্র বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে। ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের আদিবাসী মুসলিম বর্গাদারদের উপর পূর্ব পাকিস্তানী পুলিশের নির্যাতন নেমে আসে। অবশেষে রানী ইলামিত্রকে পাকিস্তান পুলিশ রহনপুর স্টেশন এলাকা থেকে আটক করে। এরপর থেকে বরেন্দ্র অঞ্চল নাচোলে রাণী ইলামিত্র ক্ষ্যাতি লাভ করেন। আলোচনা শেষে সিনিয়র সাংবাদিক সাজিদ তৈহিদ, সামাদ মেম্বার ও মুরুব্বি জিল্লুর রহমানকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অতিথিবৃন্দরা। শেষে দুপুরে কাঙ্গালী ভোজের আয়োজন করা হয়।