বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাঁশ, বেত ও মৃতশিল্প। মূলধনের অভাব কাঁচামালের দূর্মূল্য ও ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তিতে জটিলতাসহ নানা কারণে এ সব শিল্পের দুর্দিন নেমে এসেছে। বাঁশঝাড় কেটে আবাসভূমি ও আবাদযোগ্য জমি তৈরি এবং জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করায় বাঁশ দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে। আগে যে বাঁশ ২০/২৫ টাকায় বিক্রি হতো, বর্তমানে তার দাম নিম্নে ২’শ থেকে ৪’শ টাকা পর্যন্ত।
এ অঞ্চলে এক সময় প্রচুর পরিমাণে বেত পাওয়া যেত। এখন বেত পাওয়া দুষ্কর। মৃৎশিল্পের তৈরি বিভিন্ন ধরনের বাসন- কোসন, হাড়ি-পাতিল, ছোট বড় কলসী, নানা রকমের খেলনা, ঢাকনা ইত্যাদি গ্রাম বাংলার মানুষের চাহিদা মেটাতো। কুমারদের হাতে তৈরি মাটির সামগ্রী হাটে- বাজারে, গ্রাম-গঞ্জে সমাদৃত ছিল। কিন্তু বর্তমানে প্লাষ্টিক, স্টীল এবং এলুমুনিয়ামসহ বিভিন্ন প্রকার টেকসই ধাতব ও কৃত্রিম পদার্থের তৈরি সামগ্রী বাজারজাতকরণ এবং সরবরাহের ফলে এসব গ্রামীণ শিল্পজাত দ্রব্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। অপরদিকে, মৃৎ, বেত ও বাঁশ শিল্পের কাঁচামাল যেমন রং, বাঁশ, খড়, সুতলী, খড়ি, এটেল মাটি প্রভৃতির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় শিল্পের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সর্বোপরি জ্বালানির এবং পুঁজির সমস্যা প্রকট হওয়ায় ঐতিহ্যবাহী কুটির শিল্প ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। এসব গ্রামীণ শিল্প টিকিয়ে রাখার স্বার্থে শিল্পে জড়িত শ্রমিকদের ক্ষুদ্র ঋণদানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন।