কানসাটে জমে উঠেছে আমের বাজার। এখানে প্রতিদিন সাড়ে চারশ থেকে পাঁচশত ট্রাক বিভিন্ন জাতের আম বিক্রি হয়ে থাকে। এ এলাকার আমের দেশব্যপি সুনাম থাকায় বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যাপারীরা এখান থেকে আম সংগ্রহ করেন। আবার স্থানীয় ব্যাবসায়ীরাও বিভিন্ন মোকামে আম পাঠিয়ে থাকেন। তবে নতুন করে ঠাকুরগাঁও জেলার আম কানসাট বাজারে বিক্রি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এখানকার আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা। কৃষকরা ক্ষোভের সাথে জানান, চাঁঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বাজারে মিশে বিক্রি হচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলার আম। আর এসব আম কিনে প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তারা। ফলে রাজধানীক্ষ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের আভিরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও থেকে আম এনে কানসাট বাজারে বিক্রি করছেন। মঙ্গলবার দুপুরে কানসাট আম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুই ভ্যান ঠাকুরগাঁওয়ের আম এনে বিক্রির জন্য অপক্ষো করছেন। আভিরুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে ঠাকুগাঁওয়ে ১৪শ টাকা মন দরে আম কিনেছেন। সে আম বেশি দামে বিক্রির আশায় কানসাট বাজারে নিয়ে এসেছেন। এর আগেও তিনি বাইরের জেলার আম কানসাটে বিক্রি করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন বাইরের জেলার চাইতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম অনেক সুমিষ্ট ও দামও বেশি।
আভিরুল ইসলামের মত ঠাকুরগাঁও থেকে আম এনে কানসাট বাজারে বিক্রি করছেন একই উপজেলার নানধড়া এলাকার জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের বিভ্ন্নি বাজারে ঠাকুরগাঁওয়ের আমের চাদিতা তেমন নেই। ফলে বাধ্য হয়ে কানসাট বাজারে বিক্রি করছেন। তবে কেউ কেউ চিনে নিচ্ছেন তাদের আমগুলো বাইরের জেলার। আবার যারা চিনতে পারছে না-তাঁরা ভুল করেই কানসাটের আম ভেবে সমমূল্যে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কানসাট আমের হাটের উদ্যোক্তা রায়হান আলী বলেন, কানসাটের আমের চাহিদা থাকায় জেলার বাইরের আম এখানে এনে বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতারা ঠকছেন। ফলে সুনাম নষ্ট হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের। শ্যামপুর এলাকার আম চাষী জিন্নুর রহমান বলেন, আমাদের খিরসাপাত আম মধুর চেয়েও মিষ্টি। অন্যজেলার আম এত সুমিষ্ট হবে না। বেশি মুনাফার লোভে বাইরের জেলার আম কানসাটে এনে বিক্রি করা হচ্ছে। ওই আম কিনে প্রতারিত হ”েছ গ্রাহক।
মোবারকপুর এলাকার অনলাইন আম ব্যবসায়ী নেয়ামতুল্লাহ বলেন,কানসাট বাজার থেকে ২৮শ টাকা মন দরে তিনমন আম কিনে ভোক্তার কাছে পাঠান। সে আম এতটাই টক ছিল ভোক্তা খেতে পারেনি।এমনকি দুদিনের মধ্যে সব আম পচে নষ্ট হয়ে গেছে। পরে বুঝেছেন তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম ভেবে ঠাকুরগাঁওয়ের আম কিনেছিলেন।
কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক উমর ফারুক টিপু বলেন, বাইরের জেলার আম বিক্রি করলে অবশ্যই বলে দেয়া উচিৎ। সেটি মানা হচ্ছে না। যারা বাইরের জেলার আম স্থানীয় বলে বিক্রি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।